তীব্র বিরোধিতার মধ্যেই রাজ্যসভায় পাশ হল এনসিটি বিল
দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতা সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে রাজ্যসভার লড়াই কার্যত হয়ে দাঁড়াল পশ্চিমবঙ্গের ভোটের মহড়া। গভীর রাত পর্যন্ত বিতর্ক, হল্লা এবং তীব্র বিরোধিতার পর ভোটাভুটিতে পাশ হয়ে গেল জিএনসিটিডি বিল-টি (GNCTD Amendment Bill)। এর ফলে দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতা তুলে দেওয়া হল উপরাজ্যপালের হাতে। গোটা বিষয়টি নিয়ে সরকারকে আক্রমণ করতে কাল রাতেই কলকাতা থেকে চলে এসেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদেরা। তাঁদের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এই বিলটি নিয়ে আলোচনার মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন। পাল্টা বিজেপির সভাপতি এবং সাংসদ জে পি নাড্ডা জানিয়েছেন, বিজেপি এমন খেলোয়াড় নয়, যে হারতে শুরু করলে থার্ড আম্পায়ারকে দায়ী করে।
রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সংখ্যার বিচারে রাজ্যসভাতেও বিরোধী পক্ষ এই বিল আটকাতে পারবে না, তা জানাই ছিল। তা সত্ত্বেও কেন ভোটের মুখে রাজ্যসভার ৮ জন সাংসদ ছুটে এলেন দিল্লি? রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অন্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে বিজেপি-বিরোধিতা করে বাংলায় বার্তা দেওয়ার কৌশল নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর সেই কাজে এসে আজ সকালেই টুইট করেন ডেরেক। বলেন, “পাঁচটি রাজ্যে আর দু’দিন বাদেই ভোট। অথচ তৃণমূল রাজ্যসভার সাংসদেরা দিল্লি উড়ে এসেছেন কেন্দ্রের জিএনসিটি বিলটি আনার গা-জোয়ারি করে চেষ্টা আটকাতে। গণতন্ত্র, সংবিধান, সংসদের বুকে আরও একটি ছুরি বসানো হচ্ছে।”
রাজ্যসভার বিতর্কে যোগ দিয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি ডেরেক বলেন, “সিবিআই, ইডি এবং আয়কর বিভাগ— এই তিনটি এখন মোদী-শাহের নতুন জোট। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও একটি পক্ষ। আমরা চাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।” এডিএমকে, টিডিপি, বিজেডি ওয়াইএসআর কংগ্রেসের উদ্দেশে তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “আমি আপনাদেরও সতর্ক করছি। এই মোদী-শাহের দল এক দিন আপনাদের পিছনেও পড়বে।’
কার্যক্ষেত্রে অবশ্য দেখা যায়, এই দলগুলি ভোটাভুটির সময় কক্ষত্যাগ করে। জেপি নড্ডার কথায়, “বিজেপি এমন খেলোয়াড় নয় যে, হারার সম্ভাবনায় থার্ড আম্পায়ারকে দোষ দেবে। তিনি (ডেরেক) বলছেন অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা। বিজেপি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, আমরা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে কখনও প্রশ্ন তুলিনি। হেরে গেলে ইভিএম-কে দোষ দিই না আমরা। আসলে ওরা ভয় পেয়েছে।”