ফুল-মিষ্টি দিয়ে ঘরের ছেলে পল্টুকে বরণ করলেন কালনাবাসী
শঙ্খ বাজিয়ে, ফুলের মালা পরিয়ে, মিষ্টিমুখ করিয়ে ঘরের ছেলে পল্টুকে বরণ করে নিলেন কালনার (Kalna) মানুষ। তীব্র গরমে অনেকে এগিয়ে দিলেন জল-বাতাসা। বৃহস্পতিবার কালনা-২ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম চষে বেড়ালেন বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী দেবপ্রসাদ বাগ (Deboprasad Bag)। কালনার মানুষ তাঁকে পল্টু নামেই চেনেন। বিভিন্ন পাড়ায় ভোট প্রচারের সময় মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস দেখে আবেগতাড়িত হয়ে প্রার্থী বললেন, আমি আপনাদের সন্তান। সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে চাই।
কালনা বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে কালনা শহর, কালনা-২ ব্লকের আটটি পঞ্চায়েত ও কালনা-১ ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েত রয়েছে। সবকটি পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলেই রয়েছে। এবার এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে দেবপ্রসাদ বাগের নাম ঘোষণা হতেই দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা হচ্ছে বাংলার গর্ব মমতা, কালনার নব রূপকার পল্টুদা। পাশাপাশি এলাকায় দোরে দোরে হাজির হচ্ছেন প্রার্থী।
এদিন সকাল ৮টায় দেবপ্রসাদবাবু কালনা শহরের নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সিঙ্গারকোণে পার্টি অফিসে যান। তারপর ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়কে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছন বাদলা পঞ্চায়েতের চাগ্রাম লোকনাথ মন্দিরতলায়। মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করেন। হেঁটে চাগ্রাম, নোয়াড়া, গোয়াড়া, কুমোরপাড়া, আনোখা, সোদপুর, কাঁচরাগড় সহ একের পর এক গ্রামে প্রচার সারেন। গ্রামের মহিলারা শাঁখ বাজিয়ে, উলুধ্বনি ও ফুলের মালা পরিয়ে ঘরের ছেলে পল্টুকে বরণ করেন। প্রখর রোদে কোথাও গ্রামের মহিলারা জল বাতসা এগিয়ে দেন। অনেক বয়স্ক মহিলা শাড়ির আঁচল দিয়ে প্রার্থীর ঘাম মুছিয়ে দেন।
চাগ্রামের বাসিন্দা আশি ছুঁইছুঁই শম্ভুনাথ ঘোষের অকপট স্বীকারোক্তি, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গ্রামের এত উন্নয়ন এর আগে দেখিনি।
শহরের মতো ঘরে ঘরে আজ জল, নিকাশি নালা, রাস্তায় আলো হয়েছে। তাই বাংলায় আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চাই। দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা শিবপদ ঘোষ, কিশোর ঘোষ, স্বপন ভট্টাচার্যরাও মমতাকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান বলে জানালেন। শিবপদবাবু বলেন, কেন চাইব না। সিপিএমের আমল থেকে বার্ধক্যভাতার জন্য কত নেতার কাছেই না গিয়েছি। কেউ আমার ও স্ত্রীর বার্ধক্যভাতা করে দেয়নি। এই সরকার আমদের দু’জনের বার্ধক্যভাতা করে দিয়েছে। ১০০দিনের কাজ পাচ্ছি। দুর্লভপাড়ার সারথি পণ্ডিত বলেন, শহরের আত্মীয়ের বাড়িতে সকাল, দুপুর ও বিকেলের দিকে নলবাহিত জল পড়তে দেখে ভাবতাম, আমাদের গ্রামেও যদি হয়। তবে, লাইন দিয়ে গ্রামের কলে জল নেওয়ার দিন শেষ হয়েছে। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। গ্রামের বাড়ি বাড়ি আজ টাইমে নল বাহিত জল পাচ্ছি।
তৃণমূল (Trinamool) প্রার্থী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সকলের জন্য কাজ করেছেন। জাতি ধর্ম দেখেননি। ধনী, গরিব সব ঘরের মেয়েরা সবুজসাথী থেকে স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পাচ্ছে। এতদিন শহরের উন্নয়ন করে পরিষেবা দিয়েছি। আজ গ্রামে এসে দেখছি শহরের মতো উন্নয়ন শুরু হয়েছে। আমি গ্রামের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। যেভাবে গ্রামে মানুষ অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন, তাতে আমি ওঁদের কাছে চিরঋণী হয়ে থাকলাম। মায়েদের স্নেহের আঁচল ভোলার নয়। সুখে, দুঃখে আগামী দিনে সকলের পাশে থাকতে চাই।