ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতে বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা লড়বেন নির্দল হিসেবে
টানা দু’ঘণ্টা ধরে বুঝিয়েও কাজ হল না। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা আসনে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা অলোক সেন নির্দল প্রার্থী হয়েই দাঁড়াচ্ছেন। তাঁকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য শনিবার সকালে বাড়ি গিয়ে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে খালি হাতেই ফিরতে হয়।
অলোকবাবু নির্দল প্রার্থী হয়ে প্রচারে যে কথা বলছেন তাতে শুধু ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি আসনেই নয়, সর্বত্রই বিজেপিকে (BJP) চাপের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। কেননা অলোকবাবু সরাসরি বলছেন, বিজেপির দলবদলু প্রার্থীদের কোথাও ভোট দেওয়া উচিত নয়। কেননা বেশিরভাগ দলবদলু মুকুল রায়ের হাত ধরেই বিজেপিতে এসেছেন। দলে যোগ দিয়ে টিকিটও পেয়েছেন। কেননা এর পিছনে বিরাট ষড়যন্ত্র রয়েছে। মুকুল রায় তাঁর পুরোন দলের পছন্দের নেতাদের বিজেপির টিকিটে জেতানর পর তাঁদের নিয়ে আবার দলবদল করবেন নিজের সুবিধার জন্য। এরা দলবদলু। তাই বিজেপির কোনও লাভ হবে না। সেজন্যই অলোকবাবু বিজেপিতে টিকিট পাওয়া দলবদলুদের ভোট না দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন। এই তালিকায় ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি আসনের বিজেপি প্রার্থী শিখা চট্টোপাধ্যায়ও রয়েছেন।
এতে বিরোধীদের সুবিধা হচ্ছে, বিজেপির উপর চাপ বাড়ছে। এটা বুঝতে পেরেই এদিন তাঁর বাড়িতে যান রাজু বিস্তা। নির্দল প্রার্থী না হওয়ার আবেদন জানিয়ে রাজু বিস্তাকে শুনতে হল, দলবদলুদের নিয়ে অলোকবাবুর এই উপলব্ধির কথা। তিনি বলেন, দার্জিলিংয়ের সাংসদকে যেমন মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছি সেরকম জানতে চেয়েছি, শিখা চট্টোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়ার সময় যদি দল তাঁকে যোগ্য মনে করে থাকে তাহলে এখন আমি নির্দল প্রার্থী হওয়ায় আমাকে নিয়ে দলকে ভাবতে হচ্ছে কেন? আমার থেকে বেশি ভোট শিখা চট্টোপাধ্যায়ের হাতে রয়েছে। তাঁর জেতার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই তো টিকিট দেওয়া হয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ের সময় এলাকায় আমার গ্রহণযোগ্যতায় বিজেপি নেতৃত্বের ভরসা ছিল না বলেই তো আমাকে টিকিট দেওয়া হয়নি। তাই নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়ে প্রমাণ করতে চাই এই আসনে ভোটারদের কাছে কার গ্রহণযোগ্যতা বেশি। যদিও অলোক সেনের সঙ্গে সাক্ষাত নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি সাংসদ।
তাঁকে প্রার্থী না করায় বিজেপি নেতৃত্বকে জবাব দিতে চান অলোকবাবু। সেই সঙ্গে তাঁর লড়াই, দলবদলুদের বিরুদ্ধে। কেননা তিনি বলেন, সদ্য তৃণমূল ও অন্যদল থেকে আসা নেতাদেরকে টিকিট দিয়ে যে ভুল হয়েছে , সেটা ভোটের পর বিজেপির শীর্ষ নেতারা টের পাবেন। এজন্য তাঁদের মাশুলও দিতে হতে পারে।
তিনি মনে করেন, বিজেপিকে ব্যবহার করে তৃণমূলের (Trinamool) বিক্ষুব্ধ কিছু নেতা অনেকদিন ধরেই নিজেদের আখের গোছাতে শুরু করেছিলেন। বিধানসভা ভোটের আগে তাঁরা বিজেপিতে এসে টিকিট নিয়ে বিজেপির হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে জিততে চাইছেন। জেতার পর এদের আর বিজেপিতে দেখা যাবে না। কেননা নিজেদের সুবিধার জন্য তাঁরা ফের দলবদল করবেন।