প্রথম দফায় বাংলায় ভোট পড়েছে প্রায় ৮৫%
জঙ্গলমহলের পাঁচটি জেলার ৩০টি আসনে ভোট পড়ল প্রায় ৮৫ শতাংশ। কমিশন-কর্তারা মনে করছেন, বেশিরভাগ মানুষকে ভোটমুখী করার চেষ্টা অনেকটাই সফল হয়েছে।
শনিবার প্রথম দফার নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2021) হয়ে গিয়েছে। ওই দিন সর্বশেষ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোটদানের হার প্রকাশ করতে পেরেছিল কমিশন। রবিবার পূর্ণাঙ্গ হার প্রকাশ করা হয়েছে। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত প্রথম দফায় সব মিলিয়ে ভোট পড়ার হার ৮৪.৬৩ শতাংশ। এর মধ্যে বাঁকুড়ায় ৮৪.২৭, ঝাড়গ্রামে ৮৪.৭৩, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৮৭.১৬, পূর্ব মেদিনীপুরে ৮৬.৩২ এবং পুরুলিয়ায় ৮১.৭৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।
আগামী ১ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট। এ বারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নন্দীগ্রামের ভোট গ্রহণ হবে সে দিনই। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন। রবিবারে নন্দীগ্রামে সভা করেছেন মমতা। বিজেপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণের প্রচারের শেষ দিনে অমিত শাহ নন্দীগ্রামে নন্দীগ্রামে সভা করবেন। ওই দিনই তিনি ডেবরা ও পশ্চিম পাঁশকুড়ায় ‘রোড শো’ করবেন। ডেবরায় বিজেপির হয়ে প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ আরেক প্রাক্তন আইপিএস, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে লড়ছেন। পশ্চিম পাঁশকুড়ায় বিজেপির সিন্টু সেনাপতি তৃণমূলের বিধায়ক ফিরোজা বিবির বিরুদ্ধে লড়ছেন। কমিশনের আশা দ্বিতীয় দফাতেও আশানুরূপ ভোট পড়বে।
প্রথম দফায় শনিবার ১০ হাজার ২৮৮টি বুথে ভোট হয়। কমিশন জানিয়েছে, বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কোনও আইনশৃঙ্খলার সমস্যা এই ভোটে হয়নি। বাকি যে ঘটনাগুলি ছিল, তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ওই দফার ভোটের ‘স্ক্রুটিনি’-র কাজ শেষ হয়েছে। তাতে কোনও বুথে পুনর্নির্বাচন করার দরকার হচ্ছে না। নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে সিপিএম জোট-প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে প্রচারে বাধাদানের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যার জন্য রাস্তা অবরোধ এবং নন্দীগ্রাম থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান প্রার্থী। সেই ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কমিশন।
প্রথম দফার ভোট মোটের উপর নির্বিঘ্নে মিটলেও কোভিড বিধি না মানার প্রবণতা ভাবাচ্ছে কমিশন-কর্তাদের। কোভিড আবহে ভোট হওয়ার কারণে ভোট-কর্মী এবং ভোটারদের জন্য একাধিক বিধি নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল কমিশন। সেই মতো ব্যবস্থা করতে হয়েছে প্রতিটি বুথ এলাকায়। কিন্তু মাস্ক পড়া বা শারীরিক দূরত্ববিধি মানার মতো বিষয়গুলি থেকে কার্যত দূরেই থেকেছেন ভোটারদের অনেকে। রাজ্যের কোভিড সংক্রমণের হার ক্রমশ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে খামতিগুলি মিটিয়ে ফেলে কোভিড-বিধি কঠোর ভাবে মানানোর কৌশল তৈরিতে জোর দিচ্ছেন কমিশন-কর্তারা। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনগুলিকেও সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে বলে সূত্রের দাবি।
প্রথম দফার ভোটে সব মিলিয়ে ৭৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করেছিল নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় দফার ভোটেও বাহিনীর নিরাপত্তা আঁটোসাটো রাখতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ১ এপ্রিল বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩০টি বিধানসভা আসনে ভোট হবে।