প্রার্থী ঘোষণা হলেও দেওয়াল লিখনে নাম ফাঁকা, বালুরঘাটে অস্বস্তিতে বিজেপি
বালুরঘাট (Balurghat) বিধানসভায় প্রার্থী ঘোষণা হলেও বিজেপির অধিকাংশ দেওয়াল লিখনে প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রয়েছে। বিজেপির অন্দরমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের একাংশ প্রার্থী হিসেবে অশোক লাহিড়িকে মেনে নিতে চাইছে না। যেকারণে দেওয়াল লিখনে তেমন উৎসাহ নেই। প্রথমে প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় অধিকাংশ দেওয়াল লিখন শেষ করে শুধুমাত্র নামের জায়গা ফাঁকা রাখা হয়। কিন্তু প্রার্থী ঘোষণার পর এক সপ্তাহের বেশি সময় কেটে গেলেও দেওয়ালে এখনও সেই নামের জায়গা ফাঁকা রয়ে গিয়েছে।
বিজেপি (BJP) সূত্রে খবর, দলের অনেক নেতা-কর্মী প্রার্থীকে চেনেন না। আজ পর্যন্ত দলের কোনও মিটিং মিছিলে সেভাবে তাঁকে দেখা যায়নি। এমন এক ব্যক্তিকে প্রার্থী করায় বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে। বালুরঘাট সহ একাধিক এলাকায় দেওয়াল দখল করা থাকলেও সেগুলি ফাঁকা রয়েছে। প্রার্থী ঘোষণার আগে দেওয়াল লিখনের জন্য কর্মীদের এলাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রার্থী ঘোষণার পর সেই কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হওয়ায় তাঁরা এখনও জোরকদমে কাজে নামেননি। সে কারণে দেওয়ালগুলি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এই অবস্থায় কীভাবে ড্যামেজ কন্ট্রোল করে বিজেপি শিবির দেওয়াল লিখনে জোর দেবে, তা নিয়ে মাথায় হাত পড়েছে নেতৃত্বের।
বিজেপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি বিনয় বর্মন বলেন, প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভের কোনও কারণ নেই। দেওয়াল লিখন শুরু করা হয়েছে। নামের জায়গা যেখানে ফাঁকা রয়েছে দ্রুত সেগুলি পূরণ করে দেওয়া হবে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হতে চেয়ে প্রায় ১০০ জন নেতা-কর্মী রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়িকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বালুরঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী করে। কিন্তু তাঁর নাম ঘোষণা হতেই বিজেপির একাংশ কর্মীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। তাঁদের প্রশ্ন, জেলায় এত নেতা রয়েছে, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের বঞ্চিত করে দলের সঙ্গে যুক্ত নন, এমন একজনকে কেন প্রার্থী করা হল। বিজেপির জেলা অফিসে এনিয়ে কর্মীদের মধ্যে তুমুল বচসা হয় বলে সূত্রের খবর। অনেকে নির্বাচনের প্রচারে নামবেন না বলেও জানিয়ে দেন। প্রার্থী নিজে সকাল বিকেল প্রচার চলালেও সঙ্গে নেতা-কর্মীদের তেমন দেখা যাচ্ছে না। শহরের কয়েকজন নেতা প্রার্থীর সঙ্গে ঘুরছেন। প্রার্থী নিয়ে সেই ক্ষোভের আঁচ পড়েছে দেওয়াল লিখনেও। একাধিক দেওয়াল লিখনে প্রার্থীর নাম চোখে পড়ছে না। প্রার্থীর নামের জায়গা এখনও ফাঁকা রয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রামগঞ্জে দেওয়াল দখল করা থাকলেও এখনও পর্যন্ত বিজেপির কোনও প্রচার চোখে পড়ছে না। গেরুয়া শিবিরের গ্রামাঞ্চলের নেতৃত্বের দাবি, প্রার্থীকে জীবনে চোখে দেখিনি, তাঁর হয়ে কীভাবে প্রচার করব। তাই দেওয়াল লিখনে নামতেই চাইছেন না একাংশ নেতা-কর্মী। এই অবস্থায় দলের অন্দরে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দেওয়াল লিখন করতে বাধ্য হয়ে ভাড়া করা শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
এনিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্র বলেন, জেলাজুড়ে আমাদের দেওয়াল লিখন শেষ। এখন হাতেগোনা কিছু জায়গায় বাকি রয়েছে। প্রার্থীরা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন। আগে দলের মধ্যে যে সমস্যা ছিল, এখন আর কিছু নেই। বিজেপি একজন বহিরাগতকে প্রার্থী করেছে। মানুষ যেমন এটা মেনে নেবে না, তেমনই বিজেপির কর্মীরাও মেনে নেবেন না। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।