রায়নার কমিশনের প্রতিনিধিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্কে দলবদলু সাংসদ
‘ইনস্ট্রাকশন তো এই কটা দিন। এরপর ইনস্ট্রাকশন তো আমরা দেব। তখন দেখা যাবে’। এই ভাষাতেই, কমিশনের প্রতিনিধিদের হুঁশিয়ারি দিলেন দলবদলু সাংসদ সুনীল মণ্ডল(Sunil Mondal)। মঙ্গলবার বর্ধমান (Burdwan) প্রশাসনিক দপ্তরের সামনে মেজাজ হারালেন তিনি। মঙ্গলবার নিয়ম না মেনে এদিন তিনি সাংসদ হওয়ার জোর দেখিয়ে বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে বর্ধমান জেলাশাসকের দপ্তরে ঢুকতে যান বলে অভিযোগ। কমিশনের প্রতিনিধিরা নিয়মের কথা বলে বুঝিয়ে তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করলে তিনি পুলিস ও কমিশনের আধিকারিকদের এভাবে হুঁশিয়ারি দেন বলে অভিযোগ।
রায়না বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী মানিক রায় সোমবার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। কিছু কাজ বাকি থাকায় তিনি এদিন বর্ধমান জেলাশাসকের দপ্তরে আসেন। তখন তিনি নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে ঢুকে যান। পরে দলবদলু সাংসদ ঢুকতে গিয়ে বাধা পান। কমিশনের প্রতিনিধি তাঁকে জানান, আমাদের কাছে আপনার যাওয়ার ব্যাপারে ইনস্ট্রাকশন নেই। প্রার্থীর সঙ্গে ইতিমধ্যে দু’জন ঢুকেছেন। একজন ফিরলে, তবেই আপনি যেতে পারবেন। এই কথা শুনেই মেজাজ হারান তিনি। তিনি কমিশনের আধিকারিক ও পুলিসকে হুঁশিয়ারি দিতে থাকেন।
পরে অবশ্য তিনি নিয়ম মেনেই রায়নার প্রার্থীর সঙ্গে ভিতরে ঢোকেন। কিন্তু তাঁর এই মন্তব্যে জলঘোলা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, কমিশন তো বিজেপির কথা শুনেই কাজ করছে। বিজেপি নেতাদের পরামর্শে কমিশন চলছে। নেতাদের অডিও ক্লিপিং প্রকাশ্যে এসেছে। তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ওরা কমিশনের মাধ্যমে ভোটারদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। আর এখন ওরাই কমিশনের কথা শুনছে না। পুলিস ও কমিশনের আধিকারিকদের হুমকি দিচ্ছে। ক্ষমতায় আসার আগেই ওদের এই রূপ মানুষ দেখছেন। তাঁরা ভোট বাক্সে এর প্রতিক্রিয়া দেবেন।
যদিও দলবদলু সাংসদ চাপে পড়ে কিছুটা সুর নরম করে বলেন, আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। আমি তো এলাকার সাংসদ। একজন সাংসদ এলাকায় ঢুকতে পারছেন না, এমন অবস্থা এখানকার। তৃণমূলের ক্ষেত্রে কি এটা করা হয়েছে? রায়নার প্রার্থী শম্পা ধাড়া কতজন নিয়ে এসেছিলেন। আমরা এটা বলতে চেয়েছি। কোনও রাজনৈতিক দলকে আমরা আলাদা করে দেখব না। সবাইকে সমানভাবে দেখব। এটাই ইনস্ট্রাকশন হবে।
রায়নার প্রার্থী শম্পাদেবী যদিও এই অভিযোগ হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় আমার সঙ্গে দু’জন ছিলেন। কমিশনের নির্দেশ মেনে আমরা সমস্ত কাজ করেছি। তৃণমূলের ভোটে জিতে ওই সাংসদ বিজেপিতে গিয়ে এখন ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। যাঁর নিজের কোনও অস্তিত্ব নেই, তাঁর এসব বলা মানায় না।