বার বার প্রশ্নের মুখে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা
বেশ কয়েক বছর ধরেই নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নিরপেক্ষতা বার বার প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়েছে। সে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটই হোক বা ২০২০-র বিহার বিধানসভা ভোটই হোক কমিশনকে ক্লিনচিট দিতে রাজি নয় কেউই।
বিশেষ করে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Polls) দফা ভাগ নিয়ে কমিশনের নিরপেক্ষতা আবারও তলানিতে ঠেকেছে। ২৯৪ কেন্দ্রে নির্বাচনকে ৮ দফায় ভাগ করা হয়েছে। সেখানে ১২৬ কেন্দ্র বিশিষ্ট অসমে নির্বাচন হচ্ছে মাত্র ৩ পর্বে। ২০২০ সালে ২৪৩ কেন্দ্র বিশিষ্ট বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল মাত্র ৩ দফায়। তামিল নাড়ু (২৩৪ কেন্দ্র), কেরল (১৪০ কেন্দ্র), পুদুচেরি (৩০ কেন্দ্র) তে মাত্র একটি পর্বেই নির্বাচন হচ্ছে।
কমিশনের বক্তব্য, এই দীর্ঘকালীন নির্বাচনের ফলে বাংলায় নিরাপত্তা বাহিনীর যথেষ্ট সরবরাহ থাকবে। কিন্তু বিরোধীদের মতে এর আসল কারণ বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনকে বিভিন্ন দফায় ভাগ করা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একই জেলায় একাধিক দফায় ভোট হচ্ছে। এমনটা বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই, মত রাজনৈতিক মহলের। বাংলায় তৃণমূল স্তরে কাজ করার মতো যথেষ্ট কর্মী নেই বিজেপির কাছে। তাই এক দফায় অল্প সংখ্যক জায়গায় নির্বাচন হলে বিজেপি সেইসব জায়গায় ভালোভাবে মনোনিবেশ করতে পারবে। আর সেই কারণেই তাদের সুবিধার্থে বাংলার নির্বাচনকে আট দফায় ভাগ করেছে কমিশন, উঠছে অভিযোগ।
এদিকে আপার অসমে বিজেপির ভালো ফল করার কথা। কিন্তু সিএএ নিয়ে এখানেই বিজেপিকে সবচেয়ে বেশি বিরোধীতার মুখোমুখি হতে হয়। তাই প্রথমে আপার অসমে ভোট হয়ে গেলে, বাকি জায়গাগুলোতে বিজেপি সিএএ নিয়ে প্রচার চালাতে পারবে। তাই আপার অসমে ভোট রাখা হয়েছে প্রথম দফায়। এক্ষেত্রেও বিজেপিকে সুবিধে পাইয়ে দিতে নিরপেক্ষতা হারিয়েছে নির্বাচন কমিশন, বলছে রাজনৈতিক মহল।
পাশাপাশি, মুকুল রায় ও শিশির বাজোরিয়ার ভাইরাল অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে আসার পর থেকেও কমিশনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। বিজেপি যাতে বুথ এজেন্ট দিতে পারে তাই কোনও পক্ষের সাথে আলোচনা না করেই নিয়ম বদলেছে কমিশন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও (Mamata Banerjee) অভিযোগ, বিজেপি কমিশনে কোনও আবেদন জানালে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়া হয়, অন্যান্য দলের কথা শুনছে না কমিশন।
তাই, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।