বালুরঘাটে পতাকা, ফেস্টুন লাগানোর কর্মী পাচ্ছে না বিজেপি
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শহরগুলিতে প্রার্থীরা প্রচারে ঝড় তুললেও গ্রামেগঞ্জে বিজেপির তেমন কোনও প্রচার চোখে পড়ছে না। আসলে গ্রামাঞ্চলে দলীয় পতাকা, দেওয়াল লিখন ও ফেস্টুন লাগানোর মতো কর্মী খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি। হাতেগোনা দু’একজন কর্মী অধিকাংশ গ্রামে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। সব অঞ্চলে বিজেপির বুথ কমিটি না থাকার কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করছে দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। তার উপর একাংশ বুথ কমিটি মাত্র দু’তিন জন কর্মী নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। শিবরাত্রির সলতের মতো তাঁরাই একটু আধটু ভোটপ্রচার করছেন। বিজেপি’র নিচুতলার কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দলের জেলা নেতৃত্ব সেভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। মিছিল মিটিং হলেই শুধুমাত্র যোগাযোগ করেন। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে একাধিক গ্রামে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বিষয়টি নিয়ে দলের নেতৃত্বও চাপে রয়েছে।
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি বিনয় বর্মন বলেন, একেবারেই ভিত্তিহীন অভিযোগ। জেলাজুড়ে আমাদের প্রচার জোরকদমে চলছে। জেলা নেতৃত্ব গ্রামগঞ্জের মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছে। আমাদের কিছু বুথে কমিটি নেই। সেগুলি দ্রুত তৈরি হয়ে যাবে। বিধানসভা কেন্দ্রগুলির প্রত্যেকটিতে আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করব। তৃণমূলের জেলার কোঅর্ডিনেটর সুভাষ চাকি বলেন, জেলায় বিজেপির কিছু নেই। ভাঁওতা দিয়ে ভোটে জয়লাভ আর সম্ভব নয়। এটা প্রমাণ হয়ে যাবে ভোটবাক্সেই।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে জেলায় রাজনৈতিক তরজা ততই বাড়ছে। প্রার্থীরা জিততে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বিজেপির প্রার্থীরা দিনরাত এক করে প্রচার করছেন। তবে প্রার্থী প্রচারে নামলেও একাধিক গ্রামে বিজেপি কর্মীদের ভোটপ্রচারে নামতে দেখা যাচ্ছে না। কর্মীদের মধ্যে এনিয়ে কোনও উৎসাহ উদ্দীপনাও চোখে পড়ছে না। গ্রামে গ্রামে হাতেগোনা দু-একটি দেওয়ালে প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন চোখে পড়ছে। কোথাও দলীয় পতাকার দেখা মিলছে না। দেওয়ালগুলি অধিকাংশই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। প্রার্থী নিয়ে কর্মীদের একাংশের মধ্যে এখনও ক্ষোভ থাকায় এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু গ্রামে দু’একজন কর্মী প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছেন। কোথাও আবার সেটুকু করারও লোকের অভাব। অধিকাংশ এলাকায় দলীয় কার্যালয় নেই। ফলে কর্মীদের বড় সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। বিজেপি এখনও জেলায় ১০০ শতাংশ বুথ কমিটি গঠন করতে পারেনি। অধিকাংশ বুথ কমিটি দুই-তিনজন কর্মীকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তারাই দলের হয়ে ভোটপ্রচার করছে। একাংশ বিজেপি কর্মীর অভিযোগ, সারাবছর জেলা নেতৃত্ব কোনও খোঁজখবর রাখে না। সংগঠন শক্তিশালী করার কোনও উদ্যোগ নেই। মাঝেমধ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রীয়স্তরের কোনও নেতা এলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় মিছিলে যোগদান করার জন্য। এই অবস্থায় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিতেই তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।