নতুন উপসর্গ নিয়ে হাজির করোনার দ্বিতীয় ঢেউ
একাধিক নতুন উপসর্গ নিয়ে ফিরে এসেছে করোনা। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে এমনই আশঙ্কার খবর শোনা যাচ্ছে। গত একমাসে রাজ্যে নতুন করে কোভিডের বাড়বাড়ন্ত নজরে এসেছে। যাকে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলেই মনে করছে স্বাস্থ্যদপ্তর। আর এই পর্বে বেশ কিছু নতুন উপসর্গ লক্ষ করেছেন চিকিৎসকরা—কনজাংটিভাইটিস, শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ত্বকে র্যাশ বেরনো, চুলকানি, ডায়ারিয়া, হাত-পা ও গলা ব্যথা, হাত-পায়ের আঙুল বিবর্ণ হওয়া এবং প্রবল মাথাব্যথা। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত পদস্থ স্বাস্থ্যকর্তারা। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী মহামারী চলাকালীন করোনা চিহ্নিত হতে শুরু করেছিল কিছু চেনা উপসর্গ নিয়ে। যেমন—জ্বর, স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়া, কাশি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। কনজাঙ্কটিভাইটিস, ডায়ারিয়া, গলা ব্যথা কি তখন হয়নি? হয়েছে। কিন্তু এবার এইসব উপসর্গের খবর গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি আসছে। শনিবার একথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী।
গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সংক্রমণের গ্রাফ নেমে গিয়েছিল একেবারে তলানিতে। করোনা বৃদ্ধি-হ্রাসের ব্যাপারে স্বাস্থ্যদপ্তরের বুলেটিনের রেখচিত্র দেখলেই তা বোঝা যাচ্ছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণ কমে দাঁড়ায় মাত্র ১৭৯। তারপর বাকি ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে অল্পবিস্তর হ্রাসবৃদ্ধি চলতে থাকে। মাস ঘুরতেই ছবিটা আমূল বদলে যায়। গত ১ মার্চ থেকে ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। রবিবার, ৪ এপ্রিলের বুলেটিন থেকে জানা যাচ্ছে, মাত্র এক মাসের কিছু বেশি সময়ে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় দু’হাজারে (১,৯৫৭) এসে ঠেকেছে। আর সেই আক্রান্তদের মধ্যেই দেখা মিলছে নতুন উপসর্গের।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, ঠিক এ কারণে পশ্চিমবঙ্গ, অন্যান্য রাজ্য এবং বিভিন্ন দেশে দ্বিতীয় ঢেউয়ের উপসর্গগুলি খতিয়ে দেখে শীঘ্রই রাজ্যের চিকিৎসকদের জন্য নতুন করোনা গাইডলাইন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকদলের অন্যতম পিজি হাসপাতালে মেডিসিনের প্রধান ডাঃ সৌমিত্র ঘোষ বলেন, করোনার চিকিৎসা নিয়ে গত এক বছরে আমাদের বহু অভিজ্ঞতা হয়েছে। তবে নতুন উপসর্গ সহ কিছু বিষয়ে আরও সতর্কতা জরুরি। যে কোনও দিক থেকে করোনা হানা দিতে পারে—এই মানসিকতার চর্চা যাতে থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই নতুন গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে।
চারদিকে দ্বিতীয় ঢেউ ও রোগ রুখতে টিকা নেওয়ার ব্যগ্রতার মধ্যেই রাজ্যগুলিকে পাঠানো এক চিঠিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। তিনি জানান, ‘সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির করোনা যোদ্ধার তালিকায় এমন অনেকে নাম তুলেছেন, যাঁরা কোনও মাপকাঠিতেই আসেন না। এইসব মানুষের টিকা নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। পরিস্থিতি দেখে অবিলম্বে দেশজুড়ে স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের নাম নথিভুক্তকরণ বন্ধ রাখা হল। এদিকে, দু’বার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও এদিন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক সহকারী সুপার। এই ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে।