দুর্গাপুরের দুই কেন্দ্রে নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত বিজেপি
নীল ছবির নায়কই এখন প্রচারে সঙ্গী দুর্গাপুর পূর্বের বিজেপি প্রার্থী দীপ্তাংশু চৌধুরীর (Diptanshu Chaudhary)। একাধিক রোড শোয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা গিয়েছে জিৎ চক্রবর্তীকে (Jeet Chakraborty) । যাঁর একাধিক নীল ছবির ভিডিও শিল্পাঞ্চলে ভাইরাল হয়েছে। এই বিতর্কের মাঝেই দুর্গাপুরের আরএক বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মণ ঘোড়ুইকে চরিত্রের দোষ আছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন দলেরই মহিলা মোর্চার রাজ্যনেত্রী। ভোটের আগে মহিলাঘটিত কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত বিজেপি। এনিয়ে শোরগোল পড়েছে শিক্ষিত শহর দুর্গাপুরে। উন্নত সংস্কৃতির শহর দুর্গাপুরে মহিলারাও যথেষ্ট স্বাবলম্বী। তাই এই ঘটনাগুলি মহিলাদের মধ্যে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কিত বিজেপি (BJP)। ভোটযুদ্ধে নামার আগেই একের পর এক কেচ্ছা প্রকাশ্যে আসায় দলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্প বিজেপির প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার। বিজেপি যে ইস্তাহার প্রকাশ করেছে, সেখানেও নারী সুরক্ষার উপর জোর দিয়েছে। রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলে গেরুয়া শিবির। যদিও সেই বিজেপি নেতাদেরই নাম জড়াচ্ছে একের পর এক মহিলাঘটিত কেলেঙ্কারিতে। দুর্গাপুর পূর্বের বিজেপি প্রার্থী প্রথম থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন। দীপ্তাংশু চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সরকারি বাংলো দলীয় কাজে ব্যবহার করার। এর পাশাপাশি বহু পুরনোদিনের কর্মীরা দলবদলু প্রার্থীকে মেনে নিতে পারছে না বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
এবার নীল সিনেমার নায়ককে নিয়ে প্রচারে ঘোরায় জলঘোলা শুরু হয়েছে। যদিও বিপাকে পড়ে ওই নেতাকে সাসপেন্ড করেছে বিজেপি। কিন্তু তাঁর সেই সিনেমার ভিডিও ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছে দুর্গাপুরে। পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে বিজেপি প্রার্থীর ছবিও ছড়িয়ে পড়ছে। তৃণমূল ছাত্র ও যুব সংগঠনের লোকজনও এই বিষয়টি হাতিয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার শুরু করেছে। যদিও এনিয়ে দীপ্তাংশুবাবু বলেন, আমার প্রচারে অনেকেই ঘুরছে। প্রত্যেকের ব্যক্তিগত জীবন জানা সম্ভব নয়। যে ছবির কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় উনি তৃণমূলে ছিলেন।
নারীঘটিত এই কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে যখন হিমশিম খাচ্ছে গেরুয়া শিবির, তখনই প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বিরুদ্ধে চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে বোমা ফাটান দলের নেত্রী চন্দ্রমল্লিকা গোস্বামী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, লক্ষ্মণবাবু নিজের দলের কর্মীদেরই ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দেন। তিনি কী করে ভোটারদের জন্য কাজ করবেন। এনিয়ে শহরে নতুন করে শোরগোল পড়েছে। যদিও এনিয়ে লক্ষণবাবু বলেন, আমার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা থাকলে, তিনি তো মিথ্যা অপবাদ দেবেনই।
বিজেপির জেলা সভাপতি শিবরাম বর্মন বলেন, জিৎ চক্রবর্তীর ঘটনা জানতে পারার পরই দল তাঁকে সাসপেন্ড করেছে। চন্দ্রমল্লিকাদেবীর অভিযোগ নিয়ে খতিয়ে দেখা হবে। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু বলেন, এটাই বিজেপির প্রকৃত চরিত্র।