দেশ বিভাগে ফিরে যান

শতাধিক কর্মী থাকলে অফিসেই টিকাকেন্দ্র, নির্দেশ কেন্দ্রের

April 8, 2021 | 2 min read

কর্মক্ষেত্রেই করোনার টিকা(Corona Vaccine) । সরকারি হোক বা প্রাইভেট, ভ্যাকসিন নিতে ইচ্ছুক ৪৫ বছরের বেশি বয়সি শতাধিক কর্মী থাকলে এবার থেকে অফিসেই টিকাকরণের ব্যবস্থা করা যাবে। আগামী ১১ এপ্রিল থেকে দেশজুড়ে এই প্রক্রিয়া চালুর পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সেই মতো সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। ‘কর্মক্ষেত্রে করোনার টিকাকেন্দ্র’ কর্মসূচিতে একদিকে যেমন হাসপাতালে টিকাকরণের চাপ কমবে, তেমনই সংক্রমণের সম্ভাবনাও একধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে। বাঁচবে কর্মীদের সময়। তবে কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়েছে, এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাই টিকা নিতে পারবেন। তাঁদের পরিজন বা বাইরের কেউ নয়। সরকারি অফিসগুলিকে কাছের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান তার নিকটবর্তী বেসরকারি হাসপাতালে (যেখানে করোনার টিকা কর্মসূচি চলছে) নাম নথিভুক্ত করবে। কারণ, ভ্যাকসিন দেবেন হাসপাতালের নার্সরাই। 


কেন্দ্র জানিয়েছে, সরকারি অফিসে টিকা মিলবে বিনামূল্যে। প্রাইভেট কোম্পানিগুলিকে ডোজ প্রতি ২৫০ টাকা দিতে হবে। সরকারি এবং প্রাইভেট অফিসকে কমপক্ষে দিনে ৫০ জন কর্মীকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে যেমন ভ্যাকসিনের ডোজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমবে, একইসঙ্গে অনেক কম সময়ে বেশি নাগরিকের টিকাকরণ হয়ে যাবে বলেই সরকারের মত। 


তবে বয়স সংক্রান্ত প্রশ্ন কিন্তু এখনও উঠছে। স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রত্যক্ষ কোভিড যোদ্ধাদের ১৮ বছর বয়স হলেই করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। অথচ, সাধারণ নাগরিকদের নয়। এই বৈষম্য কেন? সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্যসচিব অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘এখনই সবাইকে টিকা দেওয়া না। যাদের প্রয়োজন, তাদেরই দেওয়া হবে। পৃথিবীর অন্যান্য ঩দেশেও একইরকম কর্মসূচি চলছে।’ যদিও সরকারের এই অবস্থানের সমালোচনা করেছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। রাহুল বলেছেন, ‘সরকারের এই মন্তব্য হাস্যস্পদ। প্রতিটি ভারতীয়ই তাঁর জীবন নিরাপদ করতে চায়।’ মোদি সরকারকে চাপে ফেলতে প্রিয়াঙ্কার ট্যুইট, ‘নির্বাচনী ইস্তাহারে যদি সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকতে পারে, তাহলে যখন প্রয়োজন, তখন কেন নয়?’ আর এমত পরিস্থিতিতেই আজ সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরিকালীন বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেও এই ইস্যুতে ঝড় উঠবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রে কিন্তু জানা যাচ্ছে, এখনই ১৮ বছরের বেশি বয়সিদের টিকা কর্মসূচি চালু হবে না। তবে ২৫ বছরের বেশি বয়সিদের করোনার ভ্যাকসিন কর্মসূচির বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। টিকার ডোজ পর্যাপ্ত পরিমাণ হাতে আছে কি না, তা নিশ্চিত হয়েই ওই কর্মসূচি শুরু হতে পারে। এদিকে, ‘ভ্যাকসিন মৈত্রী’র নামে বিদেশে করোনার ডোজ পাঠানোর বিরোধিতা করেছে দিল্লির শাসক দল আম আদমি পার্টি। দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির সদর দপ্তরের সামনে বুধবার বিক্ষোভও দেখিয়েছে আপ। দলের নেতা সঞ্জয় বসু বলেছেন, ‘দেশের লোক মরছে, আর নরেন্দ্র মোদি ভ্যাকসিন মৈত্রীর নামে বাহবা কুড়োচ্ছেন। বিদেশে ভ্যাকসিন পাঠানো বন্ধ করতে হবে।’ 


এরইমধ্যে দিল্লিতে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে কঠোর হচ্ছে রাজ্যগুলি। দিল্লি হাইকোর্ট বুধবার নির্দেশ দিয়েছে, গাড়িতে একা থাকলেও চালককে মাস্ক পরতেই হবে। আবার পর্যাপ্ত ডোজের অভাবে মহারাষ্ট্রের কিছু জায়গায় টিকা দেওয়া স্থগিত রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও ভ্যাকসিন কম পড়ার তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন বলেছেন, ‘সংক্রমণ রোখার ব্যর্থতা ঢাকতে কিছু রাজ্য অহেতুক প্যানিক ছড়াচ্ছে।’ এই চাপানউতোরের মধ্যেও কিন্তু সংক্রমণ থেমে নেই। ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৩৫ জন। আর বাংলায় ২ হাজার ৩৯০ জন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#covid 19, #covid vaccine, #health dept

আরো দেখুন