হিমাচল পুরভোটে বিজেপির ভরাডুবি
পাঞ্জাবের (Punjab) পর এবার হিমাচল(Himachal Pradesh)। আবার একটি রাজ্যের পুরসভা নির্বাচনে (Municipal Election) ভরাডুবি হল বিজেপির(BJP)। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষে এই ফল যথেষ্ট বড় দুঃসংবাদ। বুধবারই হিমাচল প্রদেশের চারটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে নির্বাচন হয়েছে। বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষের পর থেকেই শুরু হয় গণনা। ফল প্রকাশ হতে দেখা যায়, চারটির মধ্যে মাত্র একটি পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। অপ্রত্যাশিতভাবে দু’টি পুরসভায় এককভাবে ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেস(Congress)। অন্য আরেকটি পুরসভায় কোনওপক্ষই একক গরিষ্ঠতা পায়নি। এই ফলাফলে বেশ অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। কারণ, হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের রাজনৈতিক শক্তি একপ্রকার তলানিতে। বিশেষ করে বীরভদ্র সিংয়ের সরকার চলে যাওয়ার পর থেকে এ রাজ্যে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না রাহুল গান্ধীর দল। আগামী ২০২২ সালে হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা ভোট। তার বছরখানেক আগে চার গুরুত্বপূর্ণ পুরসভায় দল যে এভাবে ধাক্কা খেতে পারে, সেটা আঁচ করতে পারেনি বিজেপি।
সোলান, পালামপুর, ধর্মশালা এবং মান্ডি—এই চারটি কর্পোরেশনে ভোটগ্রহণ হয়েছিল বুধবার। এর মধ্যে পালামপুর আর সোলানে এককভাবে গরিষ্ঠতা পেয়েছে কংগ্রেস। মান্ডি পুরসভা দখলে রেখেছে বিজেপি। কিন্তু ধর্মশালায় কেউ গরিষ্ঠতা পায়নি। যদিও বিজেপি এখানে একক বৃহত্তম দল। ক্ষুদ্র পাহাড়ি রাজ্য হিমাচলের এই চারটি পুরসভা এখানকার অন্যতম প্রধান শহরাঞ্চল। চারটি এলাকাতেই বরাবরই বিজেপির প্রভাব ছিল। বিশেষ করে সম্প্রতি নগরপালিকা ও নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বিজেপি ভালো ফল করেছে। ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেস। সেখানে এবার দু’টি পুরসভায় জিতে অপ্রত্যাশিত ফল করেছে তারা। কিন্তু এভাবে আচমকা কর্পোরেশন নির্বাচনে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোটা বিজেপির কাছে যথেষ্ট বিস্ময়কর মনে হচ্ছে। হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড, দুই রাজ্যেই বিজেপির প্রধান সমস্যা চরম অন্তর্দ্বন্দ্ব। গোষ্ঠী কোন্দলে বহু ক্ষেত্রে উন্নয়ন থমকে রয়েছে বলে দলের অন্দরেই অভিযোগ উঠেছে। উত্তরাখণ্ডে সেই ক্ষোভ সামাল দিতে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকে বদলে দেওয়া হয়েছে। আর এবার একইভাবে জয়রাম ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারেও কোনও বড়সড় রদবদল হবে কি না, সেই জল্প না আপাতত তুঙ্গে।
তবে এই নির্বাচনগুলি চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহদের দল মোটেই অপ্রতিরোধ্য নয়। বর্তমানে যে পাঁচ রাজ্যে ভোটপর্ব সংঘটিত হচ্ছে, তার মধ্যে অসম ও বাংলা দখলই টার্গেট বিজেপির। মরিয়া হয়ে এই দুই রাজ্যে ঝাঁপিয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কেরল, তামিলনাড়ু, পুদুচেরিতে বিজেপির একক শক্তি সেভাবে নেই। এবারও তার বিশেষ হেরফের হবে না। অসমে বিজেপি ক্ষমতায় আছে। তাই এবার যদি বাংলা থেকেও শূন্য হাতে ফিরতে হয়, তাহলে সেটা হবে বিজেপির কাছে চরম বিপর্যয়। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, গোয়া, গুজরাত, পাঞ্জাব, জম্মু কাশ্মীরে নির্বাচন। সুতরাং যত ক্ষুদ্র রাজ্যই হোক, পাঞ্জাব ও হিমাচলে পুরসভা ভোটের ফলাফল বিজেপির কাছে যথেষ্ট শঙ্কাজনক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।