দেড়গুণ বাড়ল সারের দাম, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ কৃষকদের
তিন কৃষি আইন(Farm Bill 2020) এবং ডিজেলের (Diesel) অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির(Price Hike) ফাঁস আলগা হওয়ার লক্ষণ নেই, এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল সারের দাম(Fertilizer Price Hike)। দেশের সর্ববৃহৎ সার প্রস্তুতকারী সমবায় সমিতি ইন্ডিয়ান ফার্মারস ফার্টিলাইজার কোঅপারেটিভ (ইফকো) ব্যাপক হারে বাড়িয়ে দিল বিভিন্ন প্রকার সারের দাম। ফসল উৎপাদনে সবথেকে বেশি ব্যবহৃত ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেটের (ডিএপি) দাম এক ধাক্কায় বেড়ে হতে চলেছে ব্যাগ প্রতি ১ হাজার ৯০০ টাকা। যা এখন রয়েছে ১২০০ টাকা। একইসঙ্গে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ এবং সালফারের নানাবিধ অনুপাতও। এই মূল্যবৃদ্ধি পশ্চিমবঙ্গের ভোটের মধ্যবর্তী সময়ে মোদি সরকারের কাছে যথেষ্ট উদ্বেগজনক ও অস্বস্তিকর। প্রসঙ্গত, সারের মূল্য এখন আর নিয়ন্ত্রিত নয়। পেট্রল, ডিজেলের মতো সারের দামও ঠিক হয় আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাজারের উপর নির্ভর করে। ডিএপি, এমএপি এবং এনপিকে সারের নিয়ন্ত্রণ উঠে গিয়েছে।
যদিও এই মূল্যবৃদ্ধির কথা প্রকাশ হওয়ার পরই দেশজুড়ে প্রবল বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় কিছুটা পিছু হটেছে ইফকো। বৃহস্পতিবার ইফকোর পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এখনই এই মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর করা হবে না। কারণ, এখনও ইফকোর কাছে যে পুরনো স্টকের প্রায় ১১ লক্ষ ২৬ হাজার টন সার রয়েছে। সেটা বিক্রি করা হবে পুরনো দামেই। যতক্ষণ না এই স্টক শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ নতুন স্টকের সার বর্ধিত দামে বিক্রি করা হবে না। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুরনো স্টক সমাপ্ত হওয়ার আগে এমনও হতে পারে, নতুন স্টকেরও দাম কমে গেল। তখন আর নতুন বর্ধিত দাম দিতে হবে না কৃষকদের। ইফকো আশ্বাস দিয়েছে, এখনই এই বর্ধিত দাম নিয়ে কৃষকদের চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কারণ, আন্তর্জাতিক কাঁচামাল সরবরাহকারী সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে ইফকোর আলোচনা এখনও অব্যাহত।
ইফকো চেষ্টা করছে যাতে দাম কমানো যায়। যদিও কৃষক সংগঠনগুলি এই আশ্বাসে ভুলতে রাজি নয়। তাদের বক্তব্য, নতুন স্টকে সমস্ত প্রকার সারের মিনিমাম রিটেল প্রাইস যখন ধার্য হয়ে গিয়েছে, আজ না হয় কাল ওই দামেই তো কিনতে হবে! যে সারের দাম এখন ১২০০ টাকা ব্যাগ, সেটা কিনতে হবে ১৯০০ টাকা ব্যাগ! সারের দাম বেড়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই খরিফ মরশুমে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোর দাবি তুলবে কৃষক সংগঠনগুলি। বিশেষ করে মোদি সরকারের কাছে উদ্বেগজনক হতে চলেছে কৃষক আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি। কারণ, নতুন করে কৃষক আন্দোলন গতি পেতে পারে সারের ইস্যুকে সামনে রেখেই। বিশেষ করে বাংলার ভোটের মাঝখানে এভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার যথেষ্ট অস্বস্তিতে। সারের দাম বৃদ্ধি আপাতত কার্যকর না করার ঘোষণা থেকেই তা স্পষ্ট। কারণ, দাম নির্ধারণ যতই ইফকো করুক, বিজেপি-বিরোধীরা প্রচার করবেই যে, সরকারের নীতি এবং নিয়ন্ত্রণের অভাবেই এভাবে সারের দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে। সেই প্রচারকে সামাল দিতে পাল্টা কোনও আশ্বাস দেওয়া হতে পারে কৃষকদের।