তথ্য গোপনের অভিযোগ রুদ্রনীলের বিরুদ্ধে, কমিশনে চিঠি
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও তিনি বলেন, ‘দাদা আমি সাতে, পাঁচে থাকি না’। তবে তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে দাখিল হওয়া অভিযোগে দেখা যাচ্ছে, আয়-সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কার্যত ‘নয়-ছয়’ করেছেন। ভবানিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী (BJP Candidate) রুদ্রনীল ঘোষের (Rudranil Ghosh) বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে কমিশনের দ্বারস্থ হলেন সমাজ এবং আইন গবেষক বিশ্বনাথ গোস্বামী। তাঁর অভিযোগ, প্রার্থীর মনোনয়নে আয়-ব্যয় এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য গোপন করেছেন তিনি। একাধিক তথ্য তিনি নির্বাচন কমিশনকে জানাননি বলেই অভিযোগ আইন গবেষকের। বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীলের বক্তব্য, ভোটের সময় একটা অভিযোগ করতে হয়, তাই করা হয়েছে। এর কোনও সারবত্তা নেই।
ওই গবেষকের অভিযোগপত্রে চারটি পৃথক বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগকারী কমিশনে জানিয়েছেন, ২০১৫-২০ সাল পর্যন্ত বিজেপি প্রার্থী সরকারি পদে কর্মরত ছিলেন। রুদ্রনীলকে ওই সময়কালে রাজ্যের রাইট টু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কমিশনার পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তা নির্বাচন কমিশনকে জানাননি প্রার্থী। অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই সময়ে প্রতি মাসে রুদ্রনীল প্রায় তিন লক্ষ টাকা বেতন পান। যা সরকারি অর্থ। সেই আয় সম্পর্কেও কোনও তথ্য নেই রুদ্রনীলের হলফনামায়। অভিনেতা রুদ্রনীলের একটি দামি গাড়ি রয়েছে। বিদেশি কোম্পানির ওই গাড়ির বাজার দর প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। সেই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর (OD02U1000) উল্লেখ করে অভিযোগকারী বলেন, গাড়ি সংক্রান্ত কোনও তথ্যই হলফনামায় নেই। একইসঙ্গে, তাঁর অভিযোগ ২০১৬ সালে সরকারের তরফে ‘রাহা খরচ’ সংক্রান্ত প্রতিদান (রিইমবার্শমেন্ট) হিসেবে রাসবিহারীর বিজেপি প্রার্থীকে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫৮ টাকা দেওয়া হয়েছিল। তাও হলফনামায় উল্লেখ করেননি রুদ্রনীল।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, নির্বাচন কমিশনের কাছে দায়ের করা অভিযোগে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, রুদ্রনীল ঘোষ দু’টি প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম অধিকর্তা পদে যুক্ত রয়েছেন। প্রতিষ্ঠান দু’টির নাম ওয়ার্কশপ প্রোডাকশন এণ্ড অ্যালায়েড প্রাইভেট লিমিটেড এবং লালন ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেড। কোম্পানির যে তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ জানানো হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০১৬ সাল থেকে রুদ্রনীল ঘোষ এবং সৌরভ ঘোষ যুগ্মভাবে ওয়ার্কশপ প্রোডাকশন এণ্ড অ্যালায়েড প্রাইভেট লিমিটেডের অধিকর্তা পদে রয়েছেন। অন্যদিকে, ২০১৮ সাল থেকে লালন ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টরের পদে আসিন রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। তাঁর সঙ্গে যুগ্ম অধিকর্তা হলেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। এসমস্ত অভিযোগ নিয়ে বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘আপনারা হলফনামায় দেখে নিন, রয়েছে কিনা। ওরা জানেনই না কার নামে কী রয়েছে। আমাকে বাধা দেওয়াই এদের কাজ সেটাই করছেন। যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি হয়তো মন দিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পাননি। আরেকটু পড়াশোনা করুন। বিজেপি প্রার্থী সোজা-সাপ্টা দাবি, নির্বাচন কমিশনের কাছে যাবতীয় তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে।’