মমতার কোচবিহার সফর আটকাতে মরিয়া কমিশনের নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোচবিহারে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী প্রবেশ করতে পারবেন না৷ মাথাভাঙা কাণ্ডের জেরে এই নির্দেশ জারি করল নির্বাচন কমিশন(ECI)৷
শনিবার চতুর্থ দফার ভোট উত্তপ্ত হয় কোচবিহারের শীতলকুচির(Sitalkuchi) জোড়াপাটকি এলাকা। সিআরপিএফ-এর গুলিতে প্রাণ যায় ৫ ব্যক্তির। যা ঘিরে রৈজনৈতিক চাপানউতোর চরমে পৌঁছায়। এরপরই কমিশন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। উত্তর ২৪ পরগনার প্রচার সভা থেকে জানান, আগামিকাল অর্থাৎ রবিবারই শীতলকুচি গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। মমতার এই ঘোষণার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কড়া পদক্ষেপ করল কমিশন।
অর্থাৎ, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর কোচবিহার সফর ঘিরে চরম অনিশ্চতা দেখা দিয়েছে।৷ যদিও এ দিনই শিলিগুড়ি পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী৷
কমিশন সূত্রে খবর, দুই বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এবং বিবেক দুবের রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে৷ ওই রিপোর্টে উল্লেখ, আগামিকাল থেকেই বেশ কয়েকটি দলের নেতারা নিহত এবং আহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ওই এলাকায় যেতে পারেন৷ যার ফলে এলাকায় উত্তেজনা বেড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে৷ এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই রাজনৈতিক নেতাদের কোচবিহারে প্রবেশের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে শীতলকুচিতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷
একই সঙ্গে পঞ্চম দফার ভোটের শেষ প্রচারের সময়সীমাও বদল করেছে কমিশন। ৪৮ ঘন্টা নয়, ভোটের ৭২ ঘন্টা আগে এবার শেষ করতে হবে প্রচার। নির্দেশিকায় জানিয়েছে কমিশন।
শনিবার ভোট শুরু হতেই শীতলকুচির পাঠানটুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১৮ বছরের এক যুবকের। বেলা গড়াতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এরপর উত্তেজনা ছড়ায় জোরপাটকি এলাকায়। ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এলোপাথারি গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় আরও চারজনের। নির্বাচন কমিশন জানায় সিআরপিএফ জওয়ানদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। মৃতেরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের সমর্থক বলে খবর। গোটা ঘটনায় ৭২ ঘন্টার মধ্যে দুই বিশেষ পর্যবেক্ষকের রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
এই ঘটনার জন্য আগাগোড়াই ন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দায়ী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের প্ররোচনাতেই ৫ জনকে খুন হতে হল। এটা অমিত শাহর চক্রান্ত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’ ভোট মিটলে শীতলকুচির ঘটনার সিআইডি তদন্ত হবে বলে ঘোষণা করেছেন মমতা।
এদিকে শীতকুচিকাণ্ডে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁর কথায়, ‘কোচবিহারে যা হয়েছে, তা দু:খজনক। নিহতদের পরিবারের পাশে আছি। কমিশনের কাছে আর্জি, দোষীদের কঠোর শাস্তি দিন। বিজেপি সমর্থন দেখে দিদি ও তাঁর গুন্ডারা এসব করছেন। দিদি, আপনার কুর্সি চলে যাচ্ছে এটা স্পষ্ট।’