ভ্যাকসিন সঙ্কট! মুখ্যমন্ত্রীদের কাতর আবেদন স্বাস্থ্যমন্ত্রকে
আজ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ভ্যাকসিন উৎসব! অথচ বিভিন্ন রাজ্য সেই ভ্যাকসিনের সঙ্কটের অভিযোগ নিয়েই উত্তাল। ফলে উৎসব বিশবাঁও জলে। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের সঙ্কট জানিয়ে একের পর এক রাজ্য থেকে কাতর আবেদন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছে আছড়ে পড়ছে।
এই অবস্থায় সঙ্কট মেটাতে মরিয়া কেন্দ্রীয় সরকার রাশিয়ার স্পুটনিক ভ্যাকসিনের ভারতে অনুমোদন প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। শুক্রবার স্পুটনিকের প্রস্তুতকারী সংস্থার থেকে অতিরিক্ত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। যাতে কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ডের পাশাপাশি এবার স্পুটনিক ভ্যাকসিন দিয়েও কিছুটা অন্তত চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়। প্রথম বছরে ভ্যাকসিনই ছিল না। তাই লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাঁচার মরিয়া প্রয়াস ছিল। বহু প্রতীক্ষিত ও বহু চর্চিত ভ্যাকসিন দ্বিতীয় বছরের শুরুতে এসে গেলেও মাত্র তিন মাস পরই ভ্যাকসিনের অভাবে দেশজুড়ে তীব্র আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
একের পর এক রাজ্য জানিয়েছে, তাদের কাছে আর মাত্র এক দু’দিনের মতো ভ্যাকসিন অবশিষ্ট আছে। শনিবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে আর মাত্র পাঁচ দিনের ভ্যাকসিন স্টক রয়েছে। রাজস্থানের অবস্থা আরও খারাপ। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট জানিয়েছেন ৪৮ ঘন্টা পর তাঁর রাজ্যে আর টিকা থাকবে না। পাঞ্জাব ও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকেই চিঠি লিখে বলেছেন, কোন রাজ্য কত ভ্যাকসিন পাবে এবং কবে আসবে সেই সাপ্লাই তার স্পষ্ট শিডিউল প্রকাশ করা হোক। তাহলে কোনও ধোঁয়াশা থাকবে না।
মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজ্যজুড়ে একের পর এক হাসপাতালে নোটিস ঝোলাতে হচ্ছে যে, ‘নো ভ্যাকসিন’। এভাবে মহামারী শুরু হয়ে যাবে। কারণ, একইসঙ্গে করোনার সংক্রমণ আরও দ্রুত গতিতে ছড়াতে শুরু করেছে। শনিবার কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করেন কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তিনি রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলার পর সরাসরি মোদি সরকারকে আক্রমণ করে বলেছেন, মোদি সরকারের ভ্রান্ত নীতি আর ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই ভ্যাকসিনের সঙ্কটে পড়তে হয়েছে দেশবাসীকে। সরকার সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ ম্যানেজমেন্ট চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, ভ্যাকসিনের উপর দাবি সকলের সমান। তাই সরকার স্পষ্ট জানাক কত ভ্যাকসিন স্টকে আছে, কোথায় পাঠানো হচ্ছে এবং রপ্তানি এখনও চলছে কি না। উল্লেখ্য, শুক্রবারই রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বলেছিলেন, ভ্যাকসিন রপ্তানি এখনই বন্ধ করা হোক। আগে দেশের মানুষ ভ্যাকসিন পাবে। তারপর বিদেশে পাঠানো হবে। সেই আক্রমণের সুর বজায় রেখে শনিবার রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন আবার রাজ্যে রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ হারাতে শুরু করেছে। এখনই কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে টাকা পৌঁছে দিক।