১৪ এপ্রিল সংবিধান বাঁচাওয়ের ডাক আন্দোলনরত কৃষকদের
গণতন্ত্র ধ্বংস করছে বিজেপি (BJP)। প্রতিবাদ করলেই কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। শনিবার রাজ্যের চতুর্থ দফার নির্বাচনে কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি-কাণ্ড নিয়ে যখন রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতি উত্তাল, সেই পরিপ্রেক্ষিতেই তাৎপর্যপূর্ণভাবে আগামী ১৪ এপ্রিল মোদির বিরোধিতায় সংবিধান বাঁচাও দিবসের ডাক দিলেন কৃষকরা। বিক্ষোভরত চাষিদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে কৃষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে বলা হল, দেশের কৃষক, শ্রমিক-কর্মচারীদের শত্রু হিসেবে প্রতিপন্ন করার জন্য বিজেপি নেতৃত্ব একের পর এক সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে। এরকম যেকোনও সমাবেশেই ব্যাপকভাবে বিক্ষোভ দেখাতে হবে কৃষকদের।
একইসঙ্গে বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন (Farm Laws) বাতিলের দাবিতে শনিবার সকাল ৮টা থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য অবরোধ করা হল দিল্লি সংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ কেএমপি (কুণ্ডলি-মানেসর-পালওয়াল) এক্সপ্রেসওয়ে। দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকায় এমনিতেই যথেষ্ট বেকায়দায় রয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের এহেন অবস্থানে আরও চাপে পড়ে গিয়েছে কেন্দ্র। এর জেরে কিছুটা বাধ্য হয়েই করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আন্দোলন স্থগিত করে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য কৃষকদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার।
এদিন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, ‘সরকার ইতিমধ্যেই কৃষকদের সঙ্গে ১১ বার বৈঠক করেছে। প্রয়োজনে কেন্দ্র আরও কথা বলতেও রাজি। কৃষি আইন নিয়েই যেখানে কৃষকদের আপত্তি, সরকার তার উপর আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে পিছপা হবে না। কিন্তু কৃষক সংগঠনগুলি তা মানছে না এবং আপত্তির কারণও স্পষ্ট করছে না।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে আমি আন্দোলনকারীদের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, তাঁরা যেন অবিলম্বে শিশু এবং বৃদ্ধদের বাড়িতে ফেরত পাঠান। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভরত কৃষক এবং তাঁদের সংগঠনের কোভিড প্রোটোকল মেনে চলা উচিত। তাঁদের উচিত আন্দোলন স্থগিত করে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসা।’ যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এহেন আর্জিতে তাঁরা যে কর্ণপাত করবেন না, তা একপ্রকার বুঝিয়েই দিয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। সারা ভারত কিষান সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেছেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেকের দিল্লিতে প্রবেশের অধিকার রয়েছে। কিন্তু মোদি সরকার কৃষকদের দিল্লির সীমানায় আটকে রেখে দিয়েছে। তাঁদের ভিতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
একইসঙ্গে কি ওইদিন উঠে আসবে শীতলকুচির গুলি-কাণ্ডও? হান্নান মোল্লা বলেছেন, ‘সাংবিধানিক অধিকার হরণের মতো যাবতীয় বিষয় নিয়েই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন চাষিরা।’ এর পাশাপাশি সংযুক্ত কিষান মোর্চার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কৃষকদের সংবিধান বাঁচাও দিবস কর্মসূচির দিনই বিজেপি একাধিক পাল্টা সভা করতে পারে। যত বেশি সম্ভব কৃষককে সেইসব সভার বিরোধিতা করতে হবে। কৃষক সংগঠনগুলির আগামী বৈঠকেই কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে সংসদ ভবন অভিযানের দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে হবে জাতীয় কৃষক সমাবেশও।