তৃতীয় দফার পর প্রার্থীদের প্রচারের খরচে রাশ বিজেপির, জল্পনা
নির্বাচনের শুরু থেকেই একটা কথা বার বার উঠে এসেছে। তা হল, নির্বাচনে জিততে দেদার টাকা খরচ করছে বিজেপি। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, হঠাৎ করেই এই টাকা খরচে রাশ টেনেছে কেন্দ্রের শাসক দল। হঠাৎ এমন কী ঘটল যাতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল বিজেপিকে? বিজেপির সূত্রের খবর, তৃতীয় দফার নির্বাচনে ভালো ফল হবে না দলের। এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে বিজেপির আভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায়। এর পরেই অর্থ ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।
অমিত শাহ যতই জনসভায় দাবি করুন না কেন যে ৮০-৯০ শতাংশ আসনে জিতবে বিজেপি, তৃতীয় দফার নির্বাচন থেকে বিজেপির কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। নেতারা কর্মীদের আগে টাকা নিয়ে চিন্তা না করতে বললেও, পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া পাওয়া পর অর্থ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। কারণ টাকা খরচা করেও আশানুরূপ ফলের সম্ভবনা নেই বিজেপির।
নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের নির্বাচনে ব্যয় করা টাকার ওপর নজর রাখে। সেই জন্য তাদের আলাদা একটি অ্যাকাউন্টও বানাতে হয়। যাতে সেই অ্যাকাউন্ট দিয়েই নির্বাচন সংক্রান্ত সব খরচ হয়। ৩০.৮ লক্ষ টাকা অবধি খরচ করতে পারেন বিধানসভার প্রার্থীরা। বড় দলের প্রার্থীদের টাকার খরচের হিসেব রাখার জন্যে অডিটারও দেওয়া হয়ে থাকে। যদিও কর্মীদের মতে, প্রার্থীদের সুবিধার্থে ক্যাশেও প্রচুর টাকা দেয় বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির এক কর্মীর কথায়, ‘বিজেপিই একমাত্র পার্টি যারা কেন্দ্র থেকে অডিটার পাঠায়, প্রার্থীরা পার্টির দেওয়া টাকা ঠিক করে ব্যয় করছেন কিনা সেটা দেখার জন্যে।’ ঠিক কত টাকা পাঠানো হয় প্রতি প্রার্থীকে এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি পার্টি কর্মীরা। তবে তারা বলেন, এক এক জনকে এক এক অঙ্কের টাকা পাঠানো হয়। যে প্রার্থীদের জেতার সম্ভবনা বেশি তাদের বেশি টাকা পাঠানো হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে, নতুন প্রার্থীদের হাতে সরাসরি টাকা না দিয়ে পার্টির জেলা সভাপতিদের মাধ্যমে প্রচারের টাকা খরচ করা হয়।
প্রতিটি দলেই নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে তহবিলের খানিকটা অংশ আসে। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা আসছে। বিজেপির সব প্রার্থীদের জন্যেই প্রচারে রোজ কেন্দ্রের হেভিওয়েট নেতারা বাংলায় চার্টার্ড প্লেনে উড়ে আসছেন। ফাইভস্টার হোটেলে থাকছেন, কনফারেন্স করছেন। কিন্তু সেইসব খরচ প্রার্থীকে করতে হয় না।
অমিত শাহ নিজেও নাকি প্রার্থীদের অহেতুক খরচা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তাই, দলের অন্দরেই জল্পনা শুরু হয়েছে। তাহলে কি পরাজয় স্বীকার করে ফেলল বিজেপি?