নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রচারে হাজির রাহুল সিন্হা, বিতর্ক
শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যুর পর যখন উত্তাল রাজ্য, তখনই হঠাক্রই বেনজির মন্তব্য করে বসেছিলেন হাবড়ার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা। বলেছিলেন, ‘চারজন নয়.শীতলকুচিতে আটজনকে গুলি করে মারা উচিত ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর।’ তার জেরেই মঙ্গলবার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য তাঁর প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না হয়। কমিশনের নিয়ম লঙ্ঘনকারী, তাই তাঁকে নোটিশ না দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে তাঁর প্রচার বন্ধ রাখছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিজের নির্বাচনী এলাকায় তাঁরই জন্য আয়োজিত সভায় উপস্থিত থাকলেন রাহুল সিনহা। যদিও ওই সভার মূল বক্তা ছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাই সভামঞ্চে না উঠলেও মঞ্চের নীচে গোটা অনুষ্ঠানই বসে রইলেন রাহুল সিনহা (Rahul Sinha)। ফলে কার্যত কমিশনের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়েই তিনি নিজের প্রচারে হাজির থাকলেন। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।
যদিও ওই অনুষ্ঠানে হাজির হওয়া প্রসঙ্গে রাহুল সিনহার সাফাই, ‘আমার প্রচার করায় মানা আছে। আমি ভোট চাইতে পারব না। আমি ভোট চাইওনি। কাউকে নমস্কারও করিনি। হাত মেলাতে অনেকে এসেছিল আমার কাছে। আমি হাতটুকুও মেলাইনি। কিন্তু আমার প্রচার শোনাতে মানা নেই। আমার ভোট চাওয়ার ব্যাপার থাকলে মঞ্চে উঠতাম। উঠিনি। নিষেধাজ্ঞাও তাই অমান্য করিনি। কোথাও বসতে তো আমার মানা নেই।’
এদিন হাবড়াতেই তাঁর হয়ে প্রচারে আসেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেখানেই কমিশনের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়েই হাজির হন রাহুল। প্রধান বক্তা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কোলাকুলিও সারেন। রাহুল যখন গোটা সভা মঞ্চের নীচে চেয়ারে বসে রইলেন, তখন তাঁকেই জেতাতে সওয়াল করলেন শুভেন্দু। ফলে স্পষ্টতই তা ভোট প্রচারের আওতাতেই পড়ে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তাই তৃণমূলও বিষয়টি নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কমিশন। সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত আটটা পর্যন্ত চলছে সেই নিষেধাজ্ঞা। যদিও প্রচারে না বেরোলেও কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে সওয়া তিন ঘন্টার জন্য কলকাতায় গান্ধীমূর্তি পাদদেশে ধর্নায় বসেছিলেন মমতা। ছবিও আঁকেন সেখানে বসে। আর কমিশনের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা উঠতেই আজ রাতেই প্রথমে বারাসাত ও তারপর বিধাননগরে সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী। এরই মধ্যে রাহুল সিনহার নিষেধাজ্ঞা ‘লঙ্ঘন’ নতুন বিতর্ক তৈরি করল।