নববর্ষে স্পেশাল পান্তাভাত বিপণনে পঞ্চায়েত
চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষে ভূরিভোজের আয়োজন। লাঞ্চ কিংবা ডিনারে হরেক পদ। চাইলে স্পেশাল পান্তাভাত। নির্দয় গরমে এমন পান্তাভাতের জুড়ি মেলা ভার! মেনু কার্ডের শুরু থেকে শেষ, নিখাদ বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। কোভিডের (Covid 19) ছোয়াঁচ এড়িয়ে আগামী বুধ এবং বৃহস্পতিবার বাড়িতে বসেই মিলবে সব খাবার। সৌজন্যে পঞ্চায়েত দপ্তর।
সোমবার দপ্তরের আওতায় থাকা ওয়েস্ট বেঙ্গল কম্প্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের অধিকর্তা সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘আমরা তিন রকমের মেনু রেখেছি। একটি নিরামিষ ও অন্য দু’টি আমিষ। আমিষ প্লেটে থাকবে সরু চালের ভাত, মুগ ডাল, চিংড়ি মাছ দিয়ে ঝিঙে-আলু পোস্ত, ইলিশ মাছ, মুরগির মাংস, চাটনি, নবদ্বীপের দই, বাংলার দু’টি প্রসিদ্ধ জায়গা থেকে আনা দু’ রকমের মিষ্টি এবং পান। আমিষের অন্য যে পদটি আছে, তাতে শুধু বদলে যাচ্ছে মাছ ও মাংসের পদগুলি। সেখানে বাদবাকি পদের সঙ্গে থাকছে কচি পাঁঠার ঝোল আর দই-কাতলা। প্লেটগুলির দাম ৫০০ টাকা করে।’
আর নিরামিষ প্লেটে? সৌম্যজিৎবাবু জানিয়েছেন, এই প্লেটে থাকবে সরু চালের ভাতের সঙ্গে মুগের ডাল মাস্ট। থাকবে পনিরের নবরত্ন এবং এঁচোড়ের কালিয়া। বাদবাকি মিষ্টি ও অন্যান্য পদ তো থাকছেই। এই মেনুর দাম পড়বে ৩০০ টাকা। তাঁর কথায়, ‘দুপুর থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত কলকাতা ও শহরতলিতে ডেলিভারি করা হবে খাবার। ফলে কেউ ইচ্ছা করলে দুপুর বা রাত, যে কোনও সময়ের খাবার অর্ডার করতে পারেন। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর—৯১৬৩১২৩৫৫৬।’
শুধু চৈত্র সংক্রান্তি কিংবা নববর্ষেই নয়, গরমকালজুড়ে এবারও পান্তাভাতের বন্দোবস্ত রাখছে কর্পোরেশন। কর্পোরেশনের বিপণন বিভাগের প্রধান স্বাগতা রায় বলেন, ‘আমরা সুগন্ধি চালের পান্তাভাত খাওয়াব, যা অনেকটাই অভিনব। হতে পারে সেই চাল তুলাইপাঞ্জি বা গোবিন্দভোগ। যে জল দিয়ে পান্তাভাত তৈরি হবে, তা অবশ্যই মিনারেল ওয়াটার।’ পান্তাভাতে কাঁচা সরষের তেল না হলে ঠিক স্বাদ আসে না! ফলে সেটি তো থাকছেই। তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে শুকনো লঙ্কা বা গন্ধরাজ লেবু ও আলুভাতে। স্বাগতা বলেন, ‘আলুভাতে মাখা হবে ঘি, বড়ি ভাজা এবং শুকনো লঙ্কা দিয়ে। ফলে তার স্বাদ হবে অতুলনীয়। এর সঙ্গে থাকবে লঙ্কা ও পেয়াজ দিয়ে পোস্ত বাটা। সঙ্গে মৌরলা মাছের চচ্চড়ি এবং মাছের টক। আর থাকবে আমের আচার।’ মাত্র ২৭৫ টাকা খরচ করলে মিলবে পান্তাভাতের এই জমকালো প্লেট। স্বাগতার দাবি, এক প্লেট কিনলে অনায়াসেই দু’জন খেতে পারবেন। পান্তাভাত, ভূরিভোজ ছাড়াও আলাদা করে কিছু পদ রান্না করছে পঞ্চায়েত দপ্তর (Panchayet Dept)। কী নেই সেখানে—চুনো মাছের টক, কালো জিরে দিয়ে পাবদা মাছের তেল-ঝাল, আমের টক ডাল, লাউ দিয়ে ডাল বা শুক্তোর মতো নতুন কিছু পদ। যেগুলি এই গরমের জন্য একেবারে উপযুক্ত। যাঁরা প্রতিদিন খাবার ডেলিভারি নেন, তাঁরা চাইলেই এই নতুন পদ চেখে দেখতে পারেন, বলছেন দপ্তরের কর্তারা। হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়াও কর্পোরেশনের ওয়েবসাইট থেকে যেমন খাবার অর্ডার করা যাবে, তেমনই গুগল লিঙ্ক মারফতও তা সম্ভব।
অন্তত দু’দিন ‘হেঁশেল বয়কট’ করতেই পারেন গৃহিনীরা।