নিশানায় বাঙালি হিন্দু! ভোট মিটতেই দেদার ‘ডি’ নোটিশ অসমে
নয়া সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র (CAA) মাধমে শরণার্থী বাঙালিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য নির্বাচনী ময়দানে ঢালাও প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা ছোটালেও অসমের শাসক দল যে আদতে বাঙালিদের পাশে নেই, তার প্রমাণ মিলছে ভোট পর্ব মিটতেই। তিন দফার ভোট মেটার সঙ্গে সঙ্গে আবারও জোরকদমে শুরু হয়েছে হিন্দু বাঙালিদের সন্দেহভাজন নাগরিকের তকমা সেঁটে দেওয়ার কাজ। ভোটের ফলাফল প্রকাশ অবধি অপেক্ষা নয়, ভোট মিটতেই অসমের বিভিন্ন প্রান্তে বাঙালিদের নামে ইস্যু করা হচ্ছে “ডি’ নোটিশ।
এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে এবার অভিনব কায়দায় দেওয়া হচ্ছে এই সন্দেহভাজন নোটিশ। ঘরে থরে নোটিশ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি বাড়ির সামনের লাইট পোস্টে, দেওয়ালেও সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে নোটিশ। এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে অসমের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই। এর মধ্যে বেশি নাম রয়েছে হিন্দু বাঙালিদেরই। হিন্দু বাঙালিদের, বিশেষ করে ওপার বাংলা থেকে আসা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব ও সুরক্ষা প্রদানে বিজেপি সরকার প্রতিশ্রতিবদ্ধ বলে নির্বাচনী ময়দানে গলা ফাটাতে দেখা শিয়েছে মোদি-শাহ-নাড্ডা থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব বিজেপি নেতাকেই।
ভোটের ময়দানে যখন প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্টমন্ত্রীরা হিন্দু বাঙালিদের (Hindu Bengalis) সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি চলছে, ঠিক তখনই দিল্লি থেকে হিন্দু বাঙালিদের নামে “ডি’ নোটিশ জারি করা হচ্ছে। গত দিন কুঁড়ি আগেও ভোট চলাকালীন নিম্ন অসমের বেশকিছু এলাকায় এমন নোটিশ জাপির হয়েছে। আর এখন দেদারভাবে চলছে এ ধরনের নোটিশ জারি।
প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, বঙ্গাইগাও-এর ১১ নম্বর ওয়ার্ড নিবালী প্রতিভা দে নামের এক মহিলাকে আগারী ২১ এপ্রিল ভারতীয় নাগরিকত্বের সমস্তরকম তথ্য নিয়ে জেলা এফটির এক নম্বর হওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। লীলাবতী দাস নামের আরও এক মহিলার নামে জারি করা হয়েছে একই ধরনের নোটিশ। তাকে আগামী ১৭ এপ্রিল সকাল ১০টায় একই ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে হবে। তালিকায় রয়েছে প্রদীপ দাস নামে আরও এক ব্যক্তির নামও। অথচ এরা সকলেই ভোট দিয়েছেন এবারের বিধানসভা নির্বাচনে । এই ধরনের আরও অগুণতি বাঙালি হিন্দুর নামে “ডি’ নোটিশ পাঠানো হচ্ছে।
সারা অসম বাঙালি এক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক অমৃতলাল দাস অভিযোগ তুলেছেন, এই নোটিশ থেকে স্পষ্ট আমরা কোন রাজত্বে বসবাস করছি। ভোট পর্ব মিটতেই অসমে ফের শুরু হয়ে গিয়েছে “ডি’ ত্রাস। দত্ত-সাহা-রায়-ঘোষ-মালাকার-দেব প্রভৃতি পদবী দেখলেই নোটিশ ধরিয়ে দেওয়ার প্রবণতা শুরু হয়েছে অসমে। বঙ্গাইগাঁও শহরের বেশকিছু অঞ্চল জুড়ে ভোট পর্বের শুরু থেকেই এমন কাজকর্ম চলছে। যদিও সরকারের তরফ থেকে এ নিয়ে কোনও টু-শব্দটিও করা হচ্ছে না।