ভ্যাকসিনের পর এবার অক্সিজেনের আকাল, নিরুত্তাপ কেন্দ্র
ভ্যাকসিন ঘাটতির পর এবার আকাল অক্সিজেনে! (oxygen) তাই বুঝেশুনে ব্যবহার করুন। তৈরি করুন বিশেষ কন্ট্রোল রুম। সমন্বয় বাড়ান অন্য জেলা তথা রাজ্যের সঙ্গেও। প্রতি মুহূর্তে হোক পর্যালোচনা। কোভিড রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজনে ব্যবহৃত অক্সিজেন ইস্যুতে বৃহস্পতিবার রাজ্যগুলিকে এই পরামর্শ দিল কেন্দ্র। রকেট গতিতে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ১৫ দিন আগে গত ৩১ মার্চ যেখানে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৭২ হাজার ৩৩০, এখন তা দু’লক্ষেরও অধিক। রাজধানী দিল্লি সহ রাজ্যে রাজ্যে হাসপাতালে উপচে পড়ছে ভিড়। অভিযোগ, মিলছে না শয্যা। অভাব হয়েছে অক্সিজেনের, যার জেরে ছড়িয়েছে আতঙ্কও। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, অক্সিজেনের অভাব নেই। সরবরাহের মতো পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে। উৎপাদনও বাড়ানো হচ্ছে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এদিকে, রাজধানী দিল্লির পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হওয়ায় আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত নাইট কার্ফুর সিদ্ধান্তের পর এবার সপ্তাহান্তে কড়াকড়ি করছে কেজরিওয়াল সরকার। আগামী শনি-রবিবার গোটা দিন রাজ্যজুড়ে কার্ফুর কথাই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সেই মতো আজ শুক্রবার রাত ১০ টা থেকে সোমবার ভোর ৫ টা পর্যন্ত কার্ফু জারি হবে।
অন্যদিকে মুখে আশ্বাস দিলেও অক্সিজেন পরিস্থিতি যে মোটেই স্বাভাবিক নেই, তা স্পষ্ট। রাজ্যে রাজ্যে অক্সিজেনের পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকে বসেছিল কেন্দ্রের ‘ইন্টার মিনিস্টেরিয়াল এমপাওয়ারড গ্রুপ।’ দেশের কোথায় কত অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রয়েছে, কত উৎপাদন একদিনে সম্ভব, চাহিদা ব্যাপক বাড়লে কোথা থেকে বাড়তি অক্সিজেন আসবে….ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, প্রয়োজন পড়লে স্টিল প্ল্যান্টে ব্যবহারের জন্য থাকা অক্সিজেন মেডিকেল চিকিৎসার কাজে রাজ্যগুলিকে পাঠানো হবে। সেই মতো ভিলাই, বেল্লারি, ডলভির মতো স্টিল প্ল্যান্টের কোথায় কত স্টক রয়েছে, তার বিস্তারিত খোঁজখবর শুরু হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন। বৈঠকের পর রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে, কেবল অক্সিজেন যুক্তই নয়, হাসপাতালে আইসিইউ, ভেন্টিলেটর যুক্ত শয্যার সংখ্যাও বাড়ান। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রত্যক্ষ কোভিড যোদ্ধাদের প্রত্যেককে যত দ্রুত সম্ভব টিকা লাগান। দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আগামী সোমবার রাজ্যগুলির বিধানসভার স্পিকার, শাসক এবং বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে বিশেষ ভার্চুয়াল বৈঠকে বসবেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যগুলির থেকে পাওয়া রিপোর্ট মোতাবেক দিনে ৩ হাজার ৮৪২ মেট্রিক টন অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, ছত্তিশগড়, পাঞ্জাব এবং রাজস্থান, এই ১০ টি রাজ্যেই মেডিকেল অক্সিজেনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অন্য রাজ্যতেও ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৭ হাজার ১২৭ মেট্রিক টন মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদন হয়। তাই এখনও পর্যন্ত তেমন চিন্তার কারণ নেই বলেই উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কেন্দ্রীয় কমিটি মনে করলেও করোনার এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আর কিছুদিন চলতে থাকতে যে হাসপাতালে অক্সিজেনের আকাল হবে, তা বলাই বাহুল্য। তাই অক্সিজেন ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনওভাবেই যেন অক্সিজেন নষ্ট না হয়।
এএসআইয়ের অধীনস্থ তাজমহল মহ দেশের যাবতীয় মিউজিয়াম, মনুমেন্ট ও স্থান ১৫ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছে। নির্দেশ এদিন থেকেই কার্যকর হচ্ছে। করোনার কারণে গত বছরও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।