অক্সিজেন চেয়ে ফোন উদ্ধবের, বাংলায় প্রচারে মোদি ব্যস্ত, জানাল অফিস
জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারে ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ, প্রধানমন্ত্রী বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত। ২৪ ঘন্টায় তিনবার ফোন করেও উদ্ধব প্রধানমন্ত্রীর সাড়া পাননি। তাঁর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে তিনি বাংলায় প্রচারে ব্যস্ত আছেন। শনিবার এই অভিযোগ নিয়ে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হওয়ায় চরম অস্বস্তিতে পড়ে মোদি সরকারকে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হয়। শনিবার বিকেলেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন উদ্ধব থ্যাকারেকে ফোন করে আশ্বাস দেন অক্সিজেন সরবরাহের। কিন্তু তাতেও সংঘাত কমেনি। করোনা মোকাবিলায় মোদি সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ এই অভিযোগ তুলে আক্রমণ আরও তীব্র করেছে তাবৎ বিরোধী দল। তাদের অভিযোগ, একদিকে দেশের প্রতিটি রাজ্যে ভ্যাকসিন থেকে অক্সিজেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই হাহাকার চলছে। শুরু হয়েছে মৃত্যুমিছিল, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় পড়ে রয়েছেন ভোটের প্রচারে। মোদি সরকার বনাম বিরোধীদের সংঘাত চরমে পৌঁছেছে শনিবার।
এদিন মহারাষ্ট্র সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী নবাব মালিক বলেন, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব গত ২৪ ঘন্টায় তিনবার ফোন করেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি অবিলম্বে মহারাষ্ট্রকে আরও অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং রেমডেসিভির দেওয়া নিয়ে কথা বলতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ফোন করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, তিনি বাংলায় প্রচারে রয়েছেন। দিল্লি ফিরলে কথা বলা যাবে। ফলে উদ্ধব থ্যাকারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পুনরায় ফোনও আসেনি।
মহারাষ্ট্র সরকার এই অভিযোগ তুলে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছে, একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনটা অগ্রাধিকার? করোনা সঙ্কট সামাল দেওয়া? নাকি নির্বাচনী প্রচার? এই অভিযোগ নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। মোদি সরকারও পাল্টা জবাব দিয়েছে। রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেছেন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে এখন কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় চাপাতে চাইছে। কারণ, শুক্রবারই প্রধানমন্ত্রী নিজের দপ্তরে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে অক্সিজেন নিয়ে বৈঠক করেছেন। একঝাঁক সিদ্ধান্তও হয়েছে। অক্সিজেন ও ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে রাজ্যগুলিকে সার্কুলারও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রই সর্বোচ্চ পরিমাণ অক্সিজেন পেয়েছে। গোয়েল বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত ও অপদার্থ সরকারের হাতে পড়েই মহারাষ্ট্রের এই অবস্থা। এদিকে গোয়েল এই প্রত্যাঘাত করলেও দেশের সবথেকে বিপজ্জনক করোনা আক্রান্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেও প্রধানমন্ত্রীর সাড়া না পাওয়ার বার্তাটি যে যথেষ্ট ড্যামেজিং, সেটা উপলব্ধি করে শনিবার বিকেলেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফোন করেন উদ্ধব থ্যাকারেকে। তিনি আশ্বাস দেন, অবিলম্বে ১১২১টি ভেন্টিলেটর মহারাষ্ট্রে পাঠানো হচ্ছে।