আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেপ্তার গেরুয়া শিবিরের ৩ কর্মী
দুষ্কৃতীদের গুলি ছোড়ার মিথ্যা গল্প ফেঁদেও শেষ রক্ষা হল না। পুলিসের হাতে ধরা পড়ল বিজেপির (BJP) আইটি সেলের তিন কর্মী। নিজেদের বেআইনি অস্ত্রের গুলিতে জখম হওয়ার ঘটনা আড়াল করতেই দুষ্কৃতীদের গুলি ছোড়ার গল্প সাজায় শুভময় কুণ্ডু, সুমন সাহানা, সুমন পাখিরা ও দেবাশিস রায়। গুলি চালানোর ঘটনায় তারা সুকৌশলে তৃণমূলের নামও জড়িয়ে দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিসি তদন্তে পর্দা ফাঁস হয়। ঘটনায় সুমন সাহানা, সুমন পাখিরা ও দেবাশিস রায়কে পুলিস শনিবার গ্রেপ্তার করে। শুভময় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই তাকে হেফাজতে নেওয়া হবে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। রবিবার তাদের আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। গোঘাটের তৃণমূল প্রার্থী মানস মজুমদারের দাবি, বিজেপি ষড়যন্ত্র করে শান্ত গোঘাটকে অশান্ত করতে চাইছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে বিজেপির আইটিসেলের কর্মী শুভময় কুণ্ডু গুলিবিদ্ধ হয়। সুমন সাহানা, সুমন পাখিরা ও শুভময় বাইকে যাওয়ার সময় পোড়াবাগান জঙ্গলের কাছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। সেই গুলি শুভময়ের পায়ের পাতায় লাগে বলে অভিযোগ। ঘটনার সরব হন গোঘাটের বিজেপি প্রার্থী। আরামবাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শুভময়কে তিনি দেখতেও আসেন। বিজেপি গোঘাট থানায় এনিয়ে অভিযোগও দায়ের করে। এরপরই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিস।
আরামবাগ হাসপাতালে শুভময়ের কাছ থেকে ওই ঘটনা শোনার পাশাপাশি তার দুই সঙ্গীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। তাদের তিনজনের কথায় অসঙ্গতি থাকায় সুমন সাহানা ও সুমন পাখিরাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পুনর্নির্মাণ করে পুলিস। থানায় ডেকে পাঠানো হয় আর এক বিজেপি কর্মী দেবাশিস রায়কে। তার কাছেই যাচ্ছিল বিজেপির ওই তিন কর্মী। বারংবার জেরায় শেষ পর্যন্ত তারা ভেঙে পড়ে। তারা পুলিসকে ঘটনার কথা খুলে বলে।
রবিবার গোঘাট থানার ওসি অনিলকুমার রাজ বলেন, ওরা জেরায় জানিয়েছে, শুভময় ও সুমনরা ভাদুরের জঙ্গলে শনিবার দেবাশিসের সঙ্গে দেখা করতে যায়। সেখানে সবাই মিলে তাড়ি খেয়ে নেশা করে। সেই সময় অসতর্ক মুহূর্তে শুভময়ের হাত থেকে গুলি ছিটকে পায়ে লাগে। এরপরই ওই তিনজন হাসপাতাল ও পুলিসের কাছে দুষ্কৃতীদের গুলি ছোড়ার মিথ্যা গল্প ফাঁদে। ওই ঘটনায় সুমন সাহানা, সুমন পাখিরা ও দেবাশিসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুভময় সুস্থ হলেই হেফাজতে নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, নবাসন গ্ৰামের বাসিন্দা শুভময়ের বাড়ির কাছে কালীমন্দিরের উল্টো দিকে খড়ের পালুই থেকে সেভেন এমএম পিস্তল ও দু’রাউন্ড গুলি পুলিস উদ্ধার করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। গোঘাটের বিজেপি প্রার্থী বিশ্বনাথ কারক এদিন বলেন, শুভময় বিজেপির আইটি সেলের কর্মী। থানায় বলেছি, বেআইনি অস্ত্র যদি কেউ রাখে, বেআইনি কার্যকলাপ যদি কেউ করে, সে যে দলেরই হোক পুলিস তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। তবে তৃণমূল বিভিন্নভাবে চক্রান্ত করছে।
গোঘাটের তৃণমূল নেতা মানস মজুমদার বলেন, বিজেপি প্রার্থী হিসেবে বিশ্বনাথ কারকের নাম ঘোষণার পর থেকেই গোঘাটে অস্ত্র ঢোকা শুরু হয়েছে। এসব ছেলেদের হাতে বিজেপি অস্ত্র তুলে দিচ্ছে। এখানে তৃণমূলকে সরিয়ে বিজেপি
সন্ত্রাস কবলিত এলাকা গড়তে চাইছে। এবার পুলিসের তৎপরতায় বিজেপির এই দুষ্কৃতীরা মিথ্যা বলেও ধরা পড়ে গিয়েছে। আমরা চাইছি পুলিস এখানকার বিজেপি দুষ্কৃতীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করুক। প্রচুর বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হবে। গোঘাটে শান্তি বজায় থাকুক এটাই আমরা চাই।