রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ, উদাসীন নির্বাচন কমিশন

April 19, 2021 | 2 min read

১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল—মাত্র দেড় মাসের ব্যবধান। আর তাতেই প্রায় ৪৩ গুণ করোনা বেড়েছে বাংলায় (West Bengal) ! কোভিডের (COVID 19) এই রকেটগতি কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। চলতি বছরের মার্চেও দৈনিক আক্রান্ত দু’শোর কম ছিল। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন, তারপর কী এমন হল যে এহেন উল্কার গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ? মাস্ক কম পরা, করোনা বিধি মানতে অনীহা ইত্যাদি কারণ তো আগেও ছিল।  তবে কি ভা‌ইরাসের চরিত্রগত কোনও পরিবর্তন হল? স্বাস্থ্যদপ্তরের পদস্থ কর্তারা রবিবার জানালেন, ঠিক তাই।

রাজ্যে লাফিয়ে করোনা বাড়ার অন্যতম কারণ ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন। সেটির নাম মহারাষ্ট্রের ‘ডবল মিউট্যান্ট’ স্ট্রেইন। চরিত্র পাল্টানো দু’ধরনের ভাইরাস মিলে তৃতীয় স্ট্রেইন গঠন করলে, তাকে ডবল মিউট্যান্ট বলা হয়। স্বাস্থ্যকর্তাদের আশঙ্কা, বর্তমানে মহারাষ্ট্রে করোনার যে স্ট্রেইন বা নির্দিষ্ট ভাইরাসের জন্য মহামারী দেখা দিয়েছে, এটিও সেই গোত্রের। চলতি বছরে রাজ্যে কোভিড-১৯ ভাইরাসের পাঁচটি স্ট্রেইন সক্রিয়। তার মধ্যে এই নয়া স্ট্রেইনের প্রধান চরিত্র হল, এটি অত্যন্ত সংক্রামক প্রকৃতির। দফায় দফায় ভোট, লাগাতার র‌্যালি ও মিটিং-মিছিল সেই সংক্রমণে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের সময়ও আমরা দেখেছি, পরিবারের একজনের করোনা হলে বহুক্ষেত্রে অন্যদেরও হচ্ছিল। আবার কিছু ক্ষেত্রে তা হচ্ছিল না। কিন্তু এবারে এই নয়া স্ট্রেইনে পরিবারের একজনের কোভিড হলে সবাই সংক্রামিত হচ্ছেন। শিশু থেকে বৃদ্ধ, কেউ ছাড় পাচ্ছেন না। 


ঠিক কী ধরনের করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলায় সংক্রমণ হচ্ছে? স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, গত জানুয়ারি মাস থেকে সেই রহস্যোদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে স্বাস্থ্যভবন। সেইমতো ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিল ফেরত বেশ কয়েকজন করোনা আক্রান্তের নমুনা পাঠানো হয় কল্যাণীস্থিত কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সে। ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৫ দিনে দু’-তিনটি ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেইন ধরা পড়ে। সেই সঙ্গে পাওয়া যায় সম্পূর্ণ নতুন ধরনের একটি করোনা ভা‌ইরাস, যাকে ‘ডবল মিউট্যান্ট’ বলে থাকেন বিজ্ঞানীরা। পরের ১৫ দিনেও এক-দু’টি ক্ষেত্রে নতুন স্ট্রেইনের হদিশ মেলে। মার্চ মাসের প্রথম পক্ষকালে সেই সংখ্যা আরও একটু বেড়ে যায়। তবে দপ্তরের কর্তারা চমকে যান মার্চের শেষ ১৫ দিনের হিসেব দেখে। ওই সময়ে একশোর বেশি ডবল মিউট্যান্ট স্ট্রেইন পাওয়া যায়। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৪-২৫ হাজার। 


নতুন স্ট্রেইন ঠিক কতটা সংক্রামক? করোনার দুই ভ্যাকসিন, কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাকসিন তাকে রুখতে কত শতাংশ কার্যকরী? নতুন ডবল মিউট্যান্টের মারণক্ষমতাই বা কেমন? বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন একের পর এক প্রশ্ন উঠছে। দপ্তরের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, তিনটি প্রশ্নের উত্তর পাওয়া বাকি। এগুলি নিয়েই এখন কাজ চলছে জোরকদমে।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Corona Virus, #covid 19, #Eci, #COVID Second Wave

আরো দেখুন