দেশ বিভাগে ফিরে যান

অক্সিজেন, বেড আর ভ্যাকসিন সঙ্কট, উদাসীন কেন্দ্র

April 19, 2021 | 2 min read

প্রতি ১০০ জনে দেশে করোনা (COVID19) আক্রান্ত হচ্ছেন ১৭ জন। ১২ দিন আগেও যা ছিল সংখ্যাটি ছিল মাত্র ৮। এরই সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে অক্সিজেন (Oxygen) আর হাসপাতালে শয্যার (Hospital Beds) আকাল। টান পড়েছে ভ্যাকসিনেও (Vaccine)। ‘ত্রিফলা’ সমস্যায় ত্রাহি মধুসূদন রব কেন্দ্রের (Central Govt)! পাঁচদিন পরপর দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দু’ লক্ষের উপরে। গত ২৪ ঘণ্টাতেও দেশে ২ লক্ষ ৬১ হাজার ৫০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে রবিবার বিবৃতিতে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৫০১ জন নাগরিক।


এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) কোভিড বিধি মেনে চলার দাওয়াইকেই আঁকড়ে ধরেছেন। কিন্তু দেশের যখন এই ভয়াবহ পরিস্থিতি, তখন রাজ্যগুলিকে কেন স্ট্র্যাটেজি তৈরিতে স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে না? প্রশ্ন তুলে মোদিকে চিঠি দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং। তাঁর পরামর্শ, রাজ্যগুলিকে দ্রুত অক্সিজেন এবং ভ্যাকসিন পাঠান। একইসঙ্গে, বয়স ৪৫ বছরের কম হলেও স্কুল শিক্ষক, বাস-অটো-ট্যাক্সি চালক, পঞ্চায়েত কর্মী, আদালতে যাতায়াত করা আইনজীবীদের প্রত্যক্ষ কোভিড যোদ্ধা গণ্য করে টিকা দেওয়ার স্বাধীনতা দিন।


এদিকে, করোনার কবলে দেশজুড়ে হাহাকারে রাজধানী দিল্লিতে ফাঁকা পড়ে মাত্র ৪৫ টি আইসিইউ বেড। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্কুল, আশ্রম সহ অনুষ্ঠানবাড়ির ব্যাঙ্কোয়েটে ব্যবস্থা হচ্ছে কোভিড শয্যার। কেন্দ্রীয় সরকার তার ডিআরডিও’র বিশেষ হাসপাতালে ৫০০ শয্যা বরাদ্দ করল। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয় বলে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।


দিল্লির লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদেও মিলছে না কোভিড চিকিৎসার বেড। স্বয়ং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিংয়ের ট্যুইটে দেশজুড়ে করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থায় শুরু হয়েছে মোদি সরকারের সমালোচনা। এক পরিচিতের জন্য শয্যার অনুরোধ করে জেলাশাসককে আবেদন করেছেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণের রাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলে তাই প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে যদি এভাবে আবেদন করতে হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হাল, সহজেই অনুমেয়।


স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অবশ্য বক্তব্য, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কার্ফু বা লকডাউন পরিস্থিতিতে কোথাও যেন টিকাকরণ কর্মসূচি থমকে না যায়, রাজ্যগুলিকে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব। অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতেও নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ। রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, রাজ্যকে দ্রুত অক্সিজেন পৌঁছতে গ্রিন করিডরের মাধ্যমে চালানো হবে ‘অক্সিজেন এক্সপ্রেস।’

পাশাপাশি, রাজ্যে রাজ্যে তৈরি হবে অক্সিজেন প্ল্যান্ট। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, গোটা দেশে মোট ১৬২টি প্ল্যান্ট তৈরি হবে। তার জন্য খরচ করা হবে ২০১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা। মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, গুজরাত, বিহার, দিল্লি সহ ১৭টি রাজ্যে ইতিমধ্যেই এ ধরনের ৩৩টি প্ল্যান্ট রয়েছে। মে মাসের শেষে পরিস্থিতি অনেকটাই সামালানো যাবে বলেই মনে করছে মন্ত্রক। এদিনই রাজ্যগুলিকে এক নির্দেশে কেন্দ্র বলেছে, কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন রাজ্য নানবিধ কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু এর জন্য যেন ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ভ্যাকসিন নিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বলেছে কেন্দ্র।


অন্যদিকে, ডাক্তার, নার্সদের মতো স্বাস্থ্যকর্মী তথা কোভিড যোদ্ধাদের মানসিক শক্তি বাড়াতে ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজে’র ৫০ লক্ষ টাকার বিমার সময়সীমা ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বছর থেকে চালু হওয়া এই বিমায় এখনও পর্যন্ত ২৮৭ জন দাবি করেছেন। কোভিডের চিকিৎসারত অবস্থায় কোনও ডাক্তার বা নার্স মারা গেলে তাঁর পরিবারকে ওই ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#COVID Second Wave, #oxygen, #bed, #vaccine

আরো দেখুন