দক্ষিণ ২৪ পরগণায় সেফ হোমগুলিতে তৈরি থাকছে ৫২৫ বেড
চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। অন্যান্য জেলার মতো চিন্তার ভাঁজ পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কর্তাদেরও। এমনিতেই হাসপাতালে বেড অমিল। তাই সেফ হোমের উপর জোর দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। সঙ্কটপূর্ণ রোগীদের যাতে বেড পেতে সমস্যা না হয়, তার জন্য অতিরিক্ত সেফ হোম খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে যাঁদের অবস্থা সঙ্কটজনক হবে, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। বাকিদের প্রয়োজন মাফিক সেফ হোমে রাখা হবে। কোনও সময়ে যাতে জেলার হাসপাতালের বেড ভর্তি না হয়ে যায়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সতর্ক থাকার পরমার্শ দিয়েছেন জেলাশাসক। এদিকে, করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে সাগরেও সেফ হোম খুলতে হল প্রশাসনকে।
সোমবার মহেশতলার মাতৃসদনে ৫০ শয্যার সেফ হোম চালু করা হল। এছাড়াও এদিন থেকে কলকাতা (২০০ বেড) এবং জয়নগরের কর্মতীর্থেও (৮০ বেড) সেফ হোম চালু করা হয়েছে। তবে আগামী দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। আপাতত বারুইপুরের কিষান মান্ডি এবং আমতলা হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনমতো সেখানে রোগীদের রাখা হবে। জেলার সব মিলিয়ে সেফ হোমে ৫২৫টি বেড তৈরি করা হয়েছে। এদিকে, সাগরে করোনা সংক্রমণ প্রায় নির্মূল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নতুন করে সেখানে আবার ছড়াতে শুরু করেছে। দ্বীপাঞ্চল হওয়ার ফলে রোগীদের যাতে সমস্যা না-হয়, তাই গঙ্গাসাগর মেলা সংলগ্ন একটি জায়গায় সেফ হোম তৈরি করা হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার থেকে সেটি চালু করে দেওয়া হবে। বর্তমানে এই ব্লকে ২০ জনের মতো আক্রান্ত হয়েছেন। নদী পার করে যদি কোনও রোগীকে আনতে হয় কলকাতায় তার জন্য অতিরিক্ত ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। প্রতিটি সেফ হোমে যাতে রোগীরা ন্যূনতম পরিষেবা পান, তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।
তবে প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়েছে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা, মহেশতলা এবং কিছুটা বারুইপুর পুর এলাকা। বারুইপুর পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ জন। সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। বারুইপুর পুলিস জেলার সদর অফিসেও করোনা হানা দিয়েছে। সেখানে ডিএসপি (ডিআইবি) সহ ৫ থেকে ৬ জন পুলিসকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে বারুইপুর হাসপাতালে আরটিপিসিআর পরীক্ষা হলেও, তার রিপোর্ট আসছে দেরিতে। অ্যান্টিজেন টেস্ট শুধুমাত্র ভর্তি থাকা রোগীদের হচ্ছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সকাল থেকে হাসপাতালে লাইন পড়লেও সাড়ে ১১টার পর তা শুরু করছেন নার্সরা। এমনই অভিযোগ উঠেছে। যদিও এই ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করার কথা সাড়ে ১০টা থেকে। এনিয়ে রোজ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে লাইনে দাঁড়ানো বহু মানুষকে।