দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

আম্পানে ছন্নছাড়া মৌমাছির দল, মধু উৎপাদনে ঘাটতির শঙ্কা বন বিভাগের

April 20, 2021 | 2 min read

গত বছর মধু সংগ্রহে বাধ সেধেছিল করোনা। মউলিদের অনুমোদনও দেয়নি রাজ্য। এবার মহামারীর প্রকোপ আরও বেড়েছে। তা সত্ত্বেও রুজিরুটির প্রশ্নে শর্তসাপেক্ষে জঙ্গলে যাওয়ার ছাড়পত্র দিচ্ছে বনবিভাগ। কিন্তু, পাস নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না মউলিদের একটা বড় অংশ। তাঁদের আশঙ্কা—আম্পানের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের। জঙ্গলে এখনও সংসার গুছিয়ে উঠতে পারেনি মৌমাছির দল। তছনছ হয়ে গিয়েছে বহু মৌচাক। নতুন করে বাসা বা মৌচাক সেভাবে তৈরি হয়নি। তাই বৃথা পরিশ্রম করতে নারাজ মউলিরা। ফলে রাজ্যে মধু উৎপাদনে ঘাটতির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বনদপ্তরের কর্তারা।


গত ৯ এপ্রিল থেকে জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করার পাস দেওয়া শুরু হয়েছে। চলবে আগামী দু’মাস। জেলা বনবিভাগ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত মাত্র আটটি দল পাস নিয়েছে। প্রতি দলে রয়েছেন পাঁচজন মউলি। দলগুলি জঙ্গলে চলেও গিয়েছে। সাধারণত আট থেকে দশ দিন পর্যন্ত চলে মধু সংগ্রহের কাজ। তার পর কেউ না কেউ ফিরে আসেন। এবার দেখা যাচ্ছে, এই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও মউলিদের কোনও দলই ফেরেনি। বনকর্তাদের মতে, জঙ্গলে পর্যাপ্ত মধু না পেলে আরও কিছুদিন তাঁরা খুঁজে বেড়াবেন। তবে, শেষ পর্যন্ত কত কেজি মধু আনতে সক্ষম হবে মউলিদের ওই আটটি দল, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

বনবিভাগের কর্মীরা নিয়মিত নদীপথ ও জঙ্গল পরিদর্শন করেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই সময়ে ম্যানগ্রোভ গাছে ফুল আসে। জঙ্গলজুড়ে ভনভন করে উড়তে থাকে মৌমাছির দল। একাধিক গাছে দেখা মেলে ছোট-বড় চাকের। কিন্তু এবার সেই দৃশ্য উধাও। অল্প কিছু জায়গায় মৌমাছির দেখা মিললেও জঙ্গলের বেশিরভাগ অংশে তাদের দেখা নেই। এদিকে, ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের তরফে চলতি বছর ২০ মেট্রিক টন মধু সরবরাহের বরাত পেয়েছে বনবিভাগ। কিন্তু এত পরিমাণ মধু এবার উৎপাদনই হবে না। শেষপর্যন্ত কত কেজি মধু সংগ্রহ করতে মউলিরা সক্ষম হবেন, তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বনকর্তারা।


করোনা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে জঙ্গলে মধু সংগ্রহে এবার কিছু শর্ত আরোপ করেছে বনবিভাগ। সেই সব শর্ত পূরণ করলে তবেই মিলছে জঙ্গলে যাওয়ার অনুমতি। যেমন, পাঁচ জনের বেশি দল তৈরি করা যাবে না। প্রত্যেক মউলিকে জীবন বিমার আওতায় আসতে হবে। তবে, যাঁদের থাকবে না, তাঁদের সরকারের তরফে এক লক্ষ টাকার বিমা করিয়ে দেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত এমন বেশ কয়েকজন মউলির এই বিমা করিয়ে দিয়েছে বনবিভাগ। তারপরেও পাস নেওয়ার আগ্রহ নেই অনেকেরই। আসলে, বর্তমান পরিস্থিতিতে লোকসানের মুখে পড়তে চাইছেন না কেউই। তাই, বিকল্প হিসেবে বাক্সের মাধ্যমে মৌমাছি পালন ও মধু উৎপাদনে জোর দিচ্ছে বনবিভাগ। ইতিমধ্যেই এই বাক্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে সুন্দরবন এলাকায়।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#sundarban, #Forest dept

আরো দেখুন