শীতলকুচিকাণ্ডে শুরু হল প্রশাসনিক তদন্ত
কোচবিহারের শীতলকুচির (Sitalkuchi) সেই ৫/১২৬ নম্বর বুথের চার ভোটকর্মী এবং এক আশাকর্মীকে ডেকে নির্বাচনের দিন কী ঘটেছিল, তা শুনলেন কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রীনা যোশী। মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে বিকেল প্রায় চারটে পর্যন্ত এই শুনানি চলে। শুধুমাত্র মৌখিক বিবৃতি নয়, তাঁদের কাছ থেকে লিখিত বয়ান নেওয়া হয়েছে বলে ওই বুথের ভোটকর্মীরা জানিয়েছেন। এদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘এগজিকিউটিভ এনকোয়ারি’র অঙ্গ হিসেবে এই প্রক্রিয়া।
পুলিস বা আধাসামরিক বাহিনীর গুলিতে যদি কোনও ‘সিভিলিয়ানে’র মৃত্যু হয়, তাহলে নির্দিষ্ট আইন মোতাবেক এগজিকিউটিভ এনকোয়ারি হয়। এদিন সেটাই হয়েছে। ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার মহম্মদ আব্দুল রহমান, ফার্স্ট পোলিং অফিসার অরুণকুমার দাস, সেকেন্ড পোলিং দীপেন্দ্রনাথ রায়, থার্ড পোলিং দিলীপ মজুমদার ও আশাকর্মী মিনতি রায় বর্মন এদিন কোচবিহারে জেলাশাসকের দপ্তরে আসেন। তাঁদের একসঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসকের ঘরে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁদের কাছ থেকে ওই ঘটনার বিবরণ শোনেন অতিরিক্ত জেলাশাসক।
ভোটকর্মী ও আশাকর্মীর সঙ্গে তাঁদের পরিবার, আত্মীয় ও বন্ধুরা এসেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, নির্বাচনের দিনের ঘটনায় এখনও ওই ভোটকর্মীরা আতঙ্কিত। এদিন সংবাদ মাধ্যমের সামনেও তাঁরা বিশেষ কিছু বলতে চাননি। প্রসঙ্গত, শীতলকুচির ওই বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়। ঘটনার পর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাথাভাঙায় এসে মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। ইতিমধ্যেই ঘটনার সিআইডি তদন্তও শুরু হয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন ) রীনা যোশী বলেন, আমাকে একটি এগজিকিউটিভ এনকোয়ারি করতে হচ্ছে। কোনও জায়গায় পুলিস বা আধাসামরিক বাহিনী গুলি চালালে যদি কোনও সিভিলিয়ান মারা যায়, তাহলে আইন অনুসারে এই এনকোয়ারি হয়। আমি সেই তদন্ত করছি। জেলাশাসকের নির্দেশে আমি এটা করছি। জেলাশাসককেই তদন্তের রিপোর্ট দেব। ওই বুথের ফার্স্ট পোলিং অফিসার অভিজিৎ বর্মন বলেন, শীতলকুচির ৫/১২৬ বুথে নির্বাচনের দিন যে ঘটনা ঘটেছিল, তার বিবরণ জানতেই অতিরিক্ত জেলাশাসক আমাদের ডেকেছিলেন। যতটুকু জানি,সবই জানিয়েছি। পরে আমাদের লিখিত আকারে বিবরণ দিতে বলা হয়। আমরা সেটাও দিয়েছি। সেদিনের ঘটনায় এখনও আতঙ্কিত। অসুস্থ হয়ে পড়েছি। চিকিৎসা চলছে। ওই বুথের সেকেন্ড পোলিং অফিসার দীপন্দ্রেনাথ রায় বলেন, অতিরিক্ত জেলাশাসক আমাদের ডেকেছিলেন। আমাদের কাছ থেকে স্টেটমেন্ট নিয়েছেন। আমরা প্রিসাইডিং, ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড পোলিং অফিসার ও আশাকর্মী উপস্থিত ছিলাম। বেলা ১২টার সময় ঢুকেছিলাম। সাড়ে তিনটে নাগাদ বের হয়েছি। আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আলাদা আলাদা করে বিষয়টি তিনি শুনেছেন। পরে লিখিত বিবরণ জমা নেওয়া হয়েছে। ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার অবশ্য এদিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি।