হারের হ্যাটট্রিক নাইটদের, হতাশ ফ্যানেরা
লজ্জা! আইপিএলে (IPL) আবার মুখ থুবড়ে পড়ল কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)। বুধবার চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) ২২০ রানের জবাবে কেকেআরের ইনিংস ১৯.১ ওভারে ২০২ রানে শেষ হয়ে যায়। মরগ্যানদের হার ১৮ রানে। একইসঙ্গে হারের হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেলেন নাইটরা। টানা তিন ম্যাচে জয় পেল ধোনি-বাহিনী। প্যাট কামিন্সের অপরাজিত ৩৪ বলে ৬৬ রানের ইনিংস বিফলে গেল। ছ’টি ওভার বাউন্ডারি ও চারটি বাউন্ডারি দিয়ে তিনি ইনিংস সাজিয়েছিলেন। যোগ্য পার্টনার পাননি। বোলিংয়ে চেন্নাইয়ের জয়ের স্থপতি দীপক চাহার (২৯ রানে ৪ উইকেট) ও এনগিডি (২৮ রানে ৩ উইকেট)।
বুধবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে চেন্নাই সুপার কিংসের শুরুটা দেখেই মনে হয়েছিল, কপালে দুঃখ রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের। না হলে টসে জিতে কেউ এমন পিচে ফিল্ডিং নেয়? ইয়ন মরগ্যান বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক হতে পারেন, কিন্তু কেকেআরের জার্সিতে তাঁর নেতৃত্বগুণ মোটেও প্রতিফলিত হচ্ছে না। গতবার না হয় হতাশা ঢাকতে কেকেআর ম্যানেজমেন্ট টুর্নামেন্টের মাঝপথেই অধিনায়ক বদল করেছিল। কিন্তু এবার মরগ্যানকে সরিয়ে ক্যাপ্টেন করার লোক কোথায়? নিজের শহরে বসে নিশ্চয়ই হৃদয় রক্তাক্ত হয়েছে শাহরুখ খানের। কে ভেবেছিল, চেন্নাই ৩ উইকেটে ২২০ রানের বিশাল স্কোর খাড়া করবে।
নাইটরা শুরুতেই পরপর উইকেট হারায়। খাতা খুলতে পারেননি শুভমান গিল। মাত্র ৯ রান করে মাঠ ছাড়েন নীতীশ রানাও। ক্যাপ্টেন মরগ্যান ৭ রানে কট বিহাইন্ড হন। চমক ছিল না নারিনের ব্যাটেও (৪)। চারটি উইকেটই নেন পেসার দীপক চাহার। ৮ রানে রাহুল ত্রিপাঠিকে ডাগ-আউটে ফেরান এনগিডি। একটা সময় কেকেআরের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ৩১ রান। ম্যাচ প্রায় মুঠোয় চলে এসেছিল ধোনিদের। ঠিক তখনই মারমুখী হয়ে ওঠেন রাসেল। ষষ্ঠ উইকেটে কার্তিকের সঙ্গে ৮১ রান যোগ করেন তিনি। পাল্টা চাপে পড়ে সিএসকে। ক্যারিবিয়ান তারকাটি হাফ-সেঞ্চুরির পর আরও আক্রমণাত্মক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে স্যাম কারানের বলে বোল্ড হন রাসেল (তিনটি চার ও ছ’টি ছক্কার সাহায্যে ৫৪)। স্বস্তি ফেরে চেন্নাই শিবিরে। এই আউটই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। গতবার প্লে-অফে উঠতে না পারাটাই যেন শাপে বর হয়েছে চেন্নাইয়ের । আইপিএলের মঞ্চে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে মরিয়া হলুদ ব্রিগেড। তাই এবারের শুরুটা খারাপ হলেও, ধোনির দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর তার নেপথ্যে রয়েছে টিমগেম। ডু’প্লেসির ৬০ বলে অনবদ্য ৯৫ রানের পাশে জ্বলজ্বল করছে তরুণ ওপেনার রুতুরাজের ৪২ বলে ৬৪। ওপেনিং জুটিতে তাঁরা তোলেন ১১৫ রান। এই জুটি ভাঙেন বরুণ চক্রবর্তী।
(IPLকেকেআর দলে এদিন দু’টি পরিবর্তন হয়। সাকিবকে বসিয়ে খেলানো হয় নারিনকে। আর হরভজনের জায়গায় দলে আসেন নাগারকোটি। কলকাতার স্পিনাররা হলুদ ঝড়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারলেও, কামিন্সরা খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছেন। প্রথম দশ ওভারে চেন্নাই তোলে ৮২ রান। কিন্তু শেষ ১০ ওভারে তারা যোগ করে ১৩৮। মাত্র ১২ বলে ২৫ রান করেন মঈন আলি। আর ধোনির সংগ্রহ ৮ বলে ১৭। ডু’প্লেসির ব্যাটিং প্রাপ্য মর্যাদা পেত যদি তিনি শতরান করতেন। কিন্তু ৯টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে তাঁকে ৯৫ রানেই অপরাজিত থাকতে হয়। একটা বল খেলার সুযোগ পেয়েই ছক্কা হাঁকান জাদেজা।