দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

হুগলী জেলায় জয় নিয়ে আশাবাদী নয় বিজেপি

April 23, 2021 | 2 min read

বেশি দিন নয়। মাত্র দেড় মাস আগের কথা। বিজেপির (BJP) হুগলি জেলার নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন। তাতে দাবি করা হয়েছিল, জেলার ১৮টির মধ্যে ১৮টিতেই তাঁরা জিতবেন। আর এপ্রিলের শেষে এসে ঘরোয়া আলোচনায় সেই নেতৃত্বই ৩৬০ ডিগ্রি পাল্টি খাচ্ছে। পূর্বের দাবির অর্ধেক আসনও দখলে আসবে কি না নিশ্চিত করে নেতৃত্ব বলতে পারছে না। এনিয়ে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট পাঠানো নিয়েও টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে।

দলের একাংশ চাইছেন, ভোট হয়ে যাওয়ার পরে যা পরিস্থিতি আছে তারই বাস্তবতা জানানো হোক। অন্য একাংশের দাবি, পূর্বের রিপোর্টের কাছাকাছি একটি রিপোর্ট পাঠানো হোক। দলেরই এক প্রভাবশালী নেতা অবশ্য বলছেন, রিপোর্ট পাঠানো হবে কি না, কী পাঠানো হবে, সেগুলি বড় কথা নয়। বাস্তবে আরামবাগ মহকুমা ছাড়া ভালো ফলের তেমন আশা নেই। যদিও ভাঙলেও মচকাতে চাইছে না বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য নেতা স্বপন পাল বলেন, ১৮টির সবগুলিই আমরা জিতব। হুগলির মানুষ আমাদের উজাড় করে ভোট দিয়েছেন। সেই বিষয়টিই নেতৃত্বকে জানানো হচ্ছে। শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল বসু বলেন, আমাদের এলাকায় পাঁচটি বিধানসভা আসন আছে। তার চারটিতে জয় নিয়ে আমরা অতিরিক্ত নিশ্চিত। পঞ্চমটির ফলাফলও দলের পক্ষে যাবে বলেই আমাদের বুথ-ফেরত সমীক্ষায় মনে হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, দাবি করতে সমস্যা কী? বিজেপি যা দাবি করছে তার অর্ধেক দূর অস্ত এক তৃতীয়াংশ সাফল্যও জুটবে না। উল্টে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব জানাচ্ছে, অন্তত ১৬টি আসনে দলের জয় নিশ্চিত। সংখ্যাটি বেড়ে সতেরোও হতে পারে।

বিজেপির অন্দরমহলের আলোচনা সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের হিসেব-নিকেশের মূল ভিত্তি আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা। সেখানে বামেদের সৌজন্যে বিজেপির পক্ষে কিছুটা হাওয়া তৈরি হয়েছিল। সেটাকেই সার্বিকভাবে জেলার হাওয়া ধরে নিয়ে দেড় মাস আগের রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন জেলা নেতৃত্ব। কিন্তু ভোট-পরবর্তী হিসাবে দলের মধ্যে আরামবাগের হাওয়া কতটা ব্যবহার করা গিয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, জেলার বাকি অংশে তথাকথিত ওই হাওয়ার আদৌ প্রভাব পড়েছে কি না নেতৃত্ব সন্দিহান। আর এতেই হিসেব গিয়েছে গুলিয়ে। উল্টে দলের কট্টর সমর্থক, যাঁরা এবারের নির্বাচনে সরাসরি মাঠে ময়দানে দলের কৌশল কাজে লাগাতে নেমেছিলেন তাঁদের মূল্যায়ন আরও ‘বিস্ফোরক’। এই অংশের দাবি, হুগলিতে সাংসদ থাকার সুযোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছে দল। হুগলি (Hooghly) লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা কেন্দ্রে দলের বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। অর্থাৎ, চুঁচুড়া, সপ্তগ্রাম, ধনেখালি, সিঙ্গুর, বলাগড়, পাণ্ডুয়ার মতো কেন্দ্রগুলি বিজেপির আশার ফানুস মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। আবার, শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার পাঁচটি আসন—জাঙ্গিপাড়া, শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, চাঁপদানি, চণ্ডীতলায় গেরুয়া শিবিরের মূল ভরসা দলের ভোট নয়, ভোট কা
টাকাটির অঙ্ক। অর্থাৎ এখানেও জোর গলায় দাবি করার জায়গা অন্তত ভোট-পরবর্তী দলীয় সমীক্ষায় মিলছে না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #West Bengal Assembly Elections 2021

আরো দেখুন