করোনা সঙ্কটে ধাক্কা খাবে রাজস্ব আদায়, মাথায় হাত রাজ্যগুলির
একদিকে আবার করোনার সংক্রমণ (COVID 19) বাড়ছে, জীবিকা ও বাণিজ্যে আঘাতের আশঙ্কা ক্রমবর্ধমান। স্বাভাবিকভাবেই তার জেরে আগামীদিনে সরকারের রাজস্ব আদায়ও ধাক্কা খাবে। অন্যদিকে এবার রাজ্য সরকারগুলিকে ৪০০ টাকায় ভ্যাকসিন কিনতে হবে। রাজ্যগুলিকে ভ্যাকসিন (Vaccine) বিক্রির যে মূল্য সিরাম ইনস্টিটিউট (Serum Institute Of India) নির্ধারণ করেছে, সেই অনুযায়ী প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা রাজ্যগুলির ব্যয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আর্থিক সংস্থাগুলির সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে যেমন কিছু কোটার ভ্যাকসিন রাজ্য পাবে, তেমনই আবার বাকি ভ্যাকসিনের চাহিদা মেটাতে হবে নিজে থেকে ক্রয় করে। এভাবে রাজ্যগুলির ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য এখন থেকেই বাজেট তৈরি করে পৃথক তহবিল গড়তে হবে। ভ্যাকসিন ক্রয় করে গণটিকাককরণের জন্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে পশ্চিমবঙ্গের। প্রতিটি ডোজের দাম ৪০০ টাকা করে কিনতে হবে। সকলে যে সরকারিভাবে ভ্যাকসিন নেবে আগামীদিনে সেটা নাও হতে পারে।
বেসরকারিভাবেও বহু নাগরিক ভ্যাকসিন নেবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই নির্দিষ্ট দাম দিতে হবে। সেটা বর্তমানে যে দাম দিতে হচ্ছে প্রথম ডোজের জন্য, তার থেকে অনেক বেশি। কারণ, বেসরকারি সংস্থাকে সিরাম ইনস্টিটিউট ভ্যাকসিন বিক্রি করবে ৬০০ টাকা করে। বেসরকারি সংস্থা যে দামে ক্রয় করবে, সেই দামই টিকাকরণে নেবে সেরকম হবে না। স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে দাম। যদিও তার মধ্যেই রাশিয়ার স্পুটনিকও এসে যাবে। আপাতত কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড এবং স্পুটনিক ভ্যাকসিনই দেওয়া হবে নাগরিকদের।
সুতরাং রাজ্য সরকারগুলিকে অবিলম্বে অতিরিক্ত অর্থের বরাদ্দ করতে হবে ভ্যাকসিনের জন্য। যদিও শুধু রাজ্যের ক্রয় করা ভ্যাকসিন নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও রাজ্যকে দেওয়া হবে ভ্যাকসিন। কেন্দ্রের পাঠানো ভ্যাকসিন, রাজ্যের ক্রয় করা ভ্যাকসিন এবং বেসরকারি সংস্থার ভ্যাকসিন এই তিনটি ভ্যাকসিন নিয়েই আগামী মে মাস থেকে শুরু হবে নাগরিকদের টিকাকরণ কর্মসূচি। অন্যদিকে আমেরিকার ফাইজার সংস্থা জানিয়েছে তারা ভারতে ভ্যাকসিন দিতে ইচ্ছুক। কিন্তু তারা চাইছে ভ্যাকসিন সরবরাহের চুক্তি হোক কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেই। সুতরাং ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন ভ্যাকসিন চলে এলে ভারতে অনেকগুলি স্বদেশি ও বিদেশি ভ্যাকসিন একসঙ্গে পাওয়া যাবে।
সেক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক স্বস্তি পাওয়া যাবে টিকাকরণের ক্ষেত্রে। তবে তার আগে প্রতিটি রাজ্যই শঙ্কিত করোনার সংক্রমণে যদি রাজস্ব সংগ্রহে আবার বড়সড় ঘাটতি শুরু হয় তাহলে নতুন আর্থিক বছরে, এই বাড়তি অর্থ কোথা থেকে আসবে!