খেলা বিভাগে ফিরে যান

মোহনবাগানের প্রাক্তন অধিনায়ক প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনাবসান

April 24, 2021 | 2 min read

চলে গেলেন ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। রেখে গেলেন এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে। রয়েছেন পাঁচ নাতি–নাতনি। ২০১৮ সালে অক্টোবরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন। তারপর ময়দান থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন। মোহনবাগান (Mohun Bagan) ক্লাব তাঁর রক্তে মিশে গিয়েছিল। তাই অসুস্থ হওয়ার আগে কলকাতায় থাকলে প্রতিনিয়ত বিকেলে ছুটে আসতেন মোহনবাগান মাঠে। বসতেন ক্লাবের সেই বিখ্যাত লনের বেঞ্চে।

লন্ডন থেকে প্রয়াত প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলে প্রদীপ্ত গঙ্গোপাধ্যায় ফোনে বলছিলেন, “বাবা গত কয়েকদিন খুব অসুস্থ ছিলেন। পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।” প্রদীপ্তের দিদি সাবানাও থাকেন লন্ডনে। দু’জন চেষ্টা করছেন বাবার শেষকৃত্যে হাজির থাকতে। কিন্তু লন্ডন থেকে ভারতে আসার বিমান পাওয়া দুষ্কর। তাছাড়া ভারতে আসার ক্ষেত্রে কিছুটা বিধিনিষেধ রয়েছে লন্ডনে। তাই প্রদীপ্তবাবু ফোনে বলছিলেন, “মোহনবাগান অন্তপ্রাণ ছিল বাবার। নিশ্চয় তাঁর মরদেহ একবার মোহনবাগান মাঠে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে তাতে বাবার মরদেহ মোহনবাগান মাঠে নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা, তা এখান থেকে বলা সম্ভব নয়।”

ক্লাব সচিব সৃঞ্জয় বোস গভীর শোকাহত। তিনি বলছিলেন, “তাঁর মতো ফুটবলারকে গতবার জীবনকৃতি সম্মান দিতে পেরে সত্যিই আমরা গর্বিত ছিলাম। যদিও কোভিডের কারণে কোনও অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি। খারাপ লাগছে, তাঁর মতো ফুটবলারের হাতে কোনও অনুষ্ঠান করে এই সম্মান তুলে দিতে পারিনি বলে।” সৃঞ্জয় চান প্রণববাবুর মরদেহ একবার মোহনবাগান মাঠে নিয়ে আসা হোক। সেজন্য তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন।

ছয়ের দশকে শেষ অধ্যায় থেকে সাতের দশকে প্রণব গঙ্গোপাধ্যায় (Pranab Ganguly) লেফট উইংয়ে ময়দান দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। জন্ম ১৯৪৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হাওড়ায়। শৈশব কেটেছে শান্তিনিকেতনে। হাওড়ায় ফিরে এসে তিনি ভরতি হন দীনবন্ধু স্কুলে। পাওয়ার লিগ দিয়ে তাঁর ময়দানে পরিচিতি হয়। ১৯৬৭ সালে হাওড়া ইউনিয়ন থেকে মোহনবাগানে যোগ দেন। সেবছর দ্বিতীয় ম্যাচে রাজস্থানের বিপক্ষে অসাধারণ একটা গোল করে সকলের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। টানা আট বছর মোহনবাগানে খেলেছেন। ১৯৬৯ সালে মোহনবাগানের কোচ হয়ে আসেন অমল দত্ত। সেবছর লিগ ও শিল্ড পায় বাগান। শিল্ডের ফাইনালে সেবার ইস্টবেঙ্গলকে হেলায় হারিয়েছিল মোহনবাগান। ৩০ মিনিটের মধ্যে তিন গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সবুজ–মেরুন। যার মধ্যে দু’টি গোল ছিল প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়ের। সেবছর রোভার্সে খেলার সময় চোট পেয়েছিলেন হাতে। হাতে লাগালেও তাঁর খেলাকে কেউ দমাতে পারেনি। বাংলাকে তিনি দু’বার সন্তোষ ট্রফি দিয়েছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে তিনি মারডেকায় খেলেছেন। তাঁর প্রয়াণে ময়দান গভীর শোকাহত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Football, #Mohun Bagan A.C.

আরো দেখুন