রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে দ্রুত অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির নির্দেশ
করোনা (Covid 19) পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চায় না রাজ্য। তাই অক্সিজেন উৎপাদনে স্বনির্ভর হতে সরকারি হাসপাতালগুলিকে প্লান্ট তৈরির নির্দেশ দিল স্বাস্থ্যদপ্তর। রাজ্যের কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজে এখনও অক্সিজেন প্লান্ট নেই। তাদের পাশাপাশি সব জেলা, মহকুমা ও স্টেট জেনারেল হাসপাতালকে যত দ্রুত সম্ভব এধরনের প্লান্ট তৈরির জায়গা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালকেও সাধ্যমতো লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন ট্যাঙ্ক এবং অক্সিজেন জেনারেটর বসাতে বলেছে রাজ্য। এতে কোভিড রোগীর সংখ্যা বাড়লেও নিজস্ব প্লান্টের মাধ্যমে অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে পারবে হাসপাতালগুলি। প্লান্ট থেকে সেন্ট্রাল পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরাসরি চলে যাবে রোগীর শয্যার কাছে। সিলিন্ডার-নির্ভরতা কমবে।
সূত্রের খবর, প্লান্টের জন্য স্টেট জেনারেল স্তর পর্যন্ত প্রতিটি হাসপাতালকে ১৫২ বর্গমিটার জায়গা দেখতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যভবন ও বিভিন্ন জেলার পদস্থ স্বাস্থ্যকর্তারা খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, স্বাস্থ্যভবন জেলা, মহকুমা ও স্টেট জেনারেল পর্যায় পর্যন্ত অক্সিজেন প্লান্ট করার জায়গা দেখতে বলেছে। সরকারি নির্দেশমতো জায়গা দেখা হচ্ছে বলে জানান আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ গিরিশ বেরা। নামী বেসরকারি হাসপাতাল গোষ্ঠী নারায়ণা হৃদয়ালয়ার পূর্ব ভারতের প্রধান আর ভেঙ্কটেশও নির্দেশ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
দেশের অন্যতম প্রধান অক্সিজেন প্রস্তুতকারক সংস্থার পূর্ব ভারতের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘বর্তমানে কলকাতার হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের সঙ্কট নেই। কিন্তু করোনা এমন লাগামছাড়াভাবে বাড়লে জেলায় জেলায় সঙ্কট তৈরি হতে পারে। সম্ভবত তা আঁচ করেই এই দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। আমাদের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাবে রাজ্য।’ অক্সিজেন প্লান্ট নিয়ে রবিবার সকালেই রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে অনলাইন বৈঠক করে ড্রাগ কন্ট্রোল। বিকেলে বৈঠক হয় নির্মাতা সংস্থাগুলির সঙ্গেও। সূত্রের খবর, বর্তমানে সব হাসপাতাল মিলিয়ে রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদা রোজ কমবেশি ৩০০ টন। রাজ্যের উৎপাদন ও জোগান ৪৭০ টনের আশপাশে। সুতরাং হাসপাতালগুলির অক্সিজেনের (Oxygen) জন্য অহেতুক আতঙ্কের কারণ নেই। তবে স্থানীয়ভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সঙ্কট রয়েছে।
এদিকে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন করতে আজ, সোমবার থেকে কন্ট্রোল রুম চালু করছে রাজ্য। সেখানে তিন শিফটে ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করবেন। সাহায্য করবেন স্টোর্স, পুলিস ও পরিবহণ শাখার পদস্থ আধিকারিকরাও।
গত বছরের মতো এবারও করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন বেসরকারি শয্যা অধিগ্রহণ শুরু করল রাজ্য। কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা সহ বিভিন্ন জেলার ২৪টি নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালের ১,৩৮৭টি শয্যা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৯১৭টি জেনারেল, ৩৭০টি সিসিইউ, ৯০টি এইচডিইউ এবং বাচ্চাদের চিকিৎসায় ১০টি নিকু বেড।