মাস্ক তৈরি করে ‘নজির’ গড়েছেন দমদম সংশোধনাগারের বন্দিরা
ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে এবার মাস্ক (Mask) তৈরি করে রাজ্যে ‘নজির’ সৃষ্টি করল দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিরা। এই জেলের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো পুরুষ-মহিলা বন্দির চাহিদা মিটিয়েও অতিরিক্ত মাস্ক বনগাঁ, বসিরহাট, বারাকপুর মহকুমা জেলে পাঠানোর উদ্যোগ নিল জেল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে প্রাথমিকভাবে সেই কাজ শুরুও হয়েছে। কোভিড কালে জেল বন্দিদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাল কারাদপ্তর। এক আধিকারিকের কথায়, করোনাকালে সাবধান হওয়ার ক্ষেত্রে মাস্কের কোনও বিকল্প নেই। সেদিক থেকে বন্দিরা নিজেরাই তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়ায় বিভিন্ন মহলে একটা আলাদা বার্তাও যাচ্ছে। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস্ক তৈরি করার জন্য দমদম জেলের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি ইউনিট তৈরি হয়েছে। সেই ইউনিটে উৎসাহী বন্দিরা এই কাজে ব্রতী হয়েছে। তাদের গাইড করছে টেলারিং বিভাগ।
ঝড়ের গতিতে চলছে সেই মাস্ক তৈরির কাজ। জেল কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, সংশোধনাগারে তরফে মাস্ক তৈরির নানা আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ইতিমধ্যেই তুলে দেওয়া হয়েছে বন্দিদের হাতে। বাকি সমস্ত কাজটুকুই করছে বন্দিরা। সেই তালিকায় আছে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দিরাও। বন্দিদের হাতে তৈরি মাস্ক প্যাকেটবন্দি হয়ে চলে যাচ্ছে স্টোরে। পরে সেখান থেকে বিভিন্ন সেলে থাকা বন্দিদের মধ্যে তা সরবরাহ করা হচ্ছে। এই জেলের এক অফিসার বলেন, আমাদের প্রথম থেকেই উদ্দেশ্য ছিল বন্দিদের হাতে তৈরি মাস্কের কিছু পরিমাণ তুলে দেওয়া হবে জেলার পার্শ্ববর্তী মহকুমা সংশোধনাগারের বন্দিদের জন্য। আর তারই অঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় বারাকপুর, বসিরহাট ও বনগাঁ মহকুমা জেলকে। ওই অফিসারের কথায়, মূলতঃ মহকুমা জেলে বন্দির সংখ্যা থাকে ২৫০- ৩০০-র মধ্যে। কোথাও কোথাও আবার তার থেকে কিছু বেশি। সমস্ত দিক চিন্তা করেই এই তিন জেলের বন্দিদের জন্য মাস্ক সরবরাহ করার পরিকল্পনা নিই। আর তাতে সাড়া দিয়ে উৎসাহে মেতে দমদম জেলের বন্দিরা মাস্ক তৈরিতে নজির গড়েছে।
দমদম সংশোধনাগারের কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, এই জেলের বন্দিরা ইতিমধ্যে নানা জিনিস তৈরি করে কারা দপ্তরের কাছে সুনাম কুড়িয়েছেন। তাই করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা মাস্ক তৈরির বিষয়টিকেও চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। তাতে আমরা সফলও হয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য হল-এই এই ‘মহৎ’ কাজ দেখে যাতে অন্য জেলের বন্দিরাও এই কাজে বেশি মাত্রায় উৎসাহ বোধ করেন। তাঁরাও যাতে আগামী দিনে এই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন।