দ্বিতীয় ডোজ মিলবেই, আশ্বাস রাজ্যের
প্রথম ডোজ নিয়েছেন, কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ পাননি—এমন রাজ্যবাসীর তালিকা আজ বেশ দীর্ঘ। টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে সেই দ্বিতীয় ডোজ পেতে ভোগান্তির একশেষ হতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত মতো (গাইডলাইনের ৫ নম্বর ধারা) মঙ্গলবার রাজ্য বেসরকারি হাসপাতালে ১৮ বছরের বেশি বয়সিদের টিকাকরণের জন্য গাইডলাইন জারি হল। তাতে সাফ জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত যা টিকা বেসরকারি হাসপাতালগুলি পেয়েছে এবং পাচ্ছে, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তা দেওয়ার কাজ সেরে ফেলতে হবে। যত সংখ্যক ভায়াল ওই তারিখের পর বাকি থাকবে, তা ফেরত পাঠাতে হবে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ বেড়েছে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকা বহু রাজ্যবাসীর। আর তাঁদের কথা চিন্তা করেই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালে না পেলে দ্বিতীয় ডোজের ব্যবস্থা করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রশাসন। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম এদিন একটি জরুরি বৈঠক করেন। সেখানেই এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মোদি সরকার জানিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতাল ১ মে থেকে টিকা দিতে পারবে, কিন্তু তা আর কেন্দ্রের দামে মিলবে না। বাজারদরেই কিনতে হবে। সাধারণ মানুষও বেশি দাম দিয়েই বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে ভ্যাকসিন নেবেন। দ্বিতীয় ডোজেও দামের অন্যথা হবে না। পাশাপাশি শুধুমাত্র কো-উইন পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেলেই টিকা নিতে আসা যাবে। এর ফলে ১ মে থেকে বেসরকারি হাসপাতালে টিকাকরণ নিয়ে চরম সংশয় দেখা দিয়েছিল। রাজ্য সরকারের আশ্বাসে সেই ধন্দ কাটবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, রাজ্য মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ১ কোটি ৩ লক্ষ টিকা দিয়েছে। ৮৪ লক্ষ মানুষকে প্রথম ডোজ এবং ১৯ লক্ষ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ (Covid Vaccine) দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজের জন্য আগামী দেড় মাসের মধ্যে কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যকে আনুমানিক ৬৫ লক্ষ ভ্যাকসিন পেতেই হবে। না হলে সময়মতো দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না ওই সংখ্যক রাজ্যবাসীকে। কার্যত নিরর্থক হয়ে যাবে ওই বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রথম ডোজের টিকাকরণ। পাশাপাশি, একটি ডোজ পাওয়া কোনও রাজ্যবাসী আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। অথচ, শহরের কোনও বড় বেসরকারি হাসপাতালই ভ্যাকসিন নির্মাতাদের কাছ থেকে তাদের চাহিদামতো ভায়াল প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি পায়নি। বাড়ছে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও। মঙ্গলবার রাজ্যে নতুন করে সংক্রামিত হয়েছেন ১৬ হাজার ৪০৩ জন। মৃত্যু এ পর্যন্ত সর্বাধিক—৭৩ জন। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যসচিবের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন রাজ্যের পাঁচ বড় প্রাইভেট হাসপাতালের কর্তারা। তাদের সরকার আশ্বাস দিয়েছে, ১ মে থেকে বেনজির ভোগান্তি এড়াতে সরকার প্রয়োজনে কেন্দ্রকে চিঠি লিখে টিকা চাইবে। বেসরকারি ক্ষেত্রে টিকাকরণ প্রক্রিয়া মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারি টিকাকেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়াচ্ছে রাজ্য।