উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

বিজেপি প্রার্থীকে গুলির মামলায় ধৃত দলীয় প্রধানের ঘনিষ্ঠ

April 28, 2021 | 2 min read

বিজেপির প্রার্থী গোপাল সাহাকে গুলি করার ঘটনায় সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির উকিল মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ আকাশ মণ্ডল গ্রেপ্তার হয়েছে। ধৃত ব্যক্তিও বিজেপির কর্মী। বিষয়টি মালদহ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির জয়ের পথে কাঁটা হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আকাশ শুধু  প্রধান ঘনিষ্ঠ নয়,  সম্পর্কে উকিলবাবুর ভাইপো। তাকে গত বৃহস্পতিবার মালদহ থানার পুলিস গ্রেপ্তার করে  আদালতের নির্দেশে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।  স্বাভাবিকভাবে নিজেদের দলেরই প্রার্থীকে গুলি করার ঘটনায় বিজেপি যোগ প্রকাশ্যে আসায় চরম অস্বস্তিতে দলের মালদহ জেলা নেতৃত্ব। প্রথম দিকে বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে অভিযোগ তুললেও  কার্যত সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে বলে  তৃণমূল ও বাম-কংগ্রেস জোট দাবি করে ভোটপ্রচার করেছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় মূল চক্রী বিজেপি ঘনিষ্ঠ বিকাশ হালদার ও আকাশ মণ্ডল। তারা গোপালবাবুকে খুন করার জন্য কালিয়াচকের এক বাসিন্দাকে সুপারি দিয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান। স্বাভাবিকভাবেই প্রার্থীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে বিজেপির নাম জড়িয়েছে। 


মালদহ থানার আইসি হীরক বিশ্বাস বলেন, গুলি চালানোর ঘটনায় ধৃত সাতজন যুক্ত। একজন পরিকল্পনা করেছিল। আরেকজন গুলি করেছে। বাকি পাঁচজন সহযোগিতা করেছে। আমরা এনিয়ে তদন্ত চালাচ্ছি।  সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির উকিল মণ্ডল বলেন, থানার মাধ্যমে আমার ভাইপোকে হোমে রেখে  মানসিক রোগের চিকিত্সা করাচ্ছিলাম। এটা থানার পদস্থ পুলিসকর্তারা জানেন। তা সত্ত্বেও  তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়।  আমার বদনাম করতে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় বিজেপিতে কোনও প্রভাব পড়বে না। কিংবা দলের জয়ের পথে কাঁটা  হয়েও দাঁড়াবে না।


পুরাতন মালদহের তৃণমূল নেতা জহর ঘোষ বলেন, সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। সেটা আমরা আগে থেকেই বলে আসছিলাম।  তা সত্ত্বেও বিজেপি নেতারা অপপ্রচার করছিলেন। তাদেরই লোক চক্রান্ত করে প্রার্থীকে গুলি করে।  সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসছে। গুলি করার পর ওরা সহানুভূতির ভোট চাইছিল, এখন সেটা পাবে না। মানুষ ২৯  এপ্রিল  এ ধরনের মিথ্যাচারের যোগ্য  জবাব ইভিএমে দেবে। 


মালদহ জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, দলের প্রার্থীকে গুলি করিয়ে দিয়ে বিজেপি সহানুভূতির ভোট পাবে না। মালদহ বিধানসভা কেন্দ্রে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ভোট হয়। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে আমাদের প্রার্থী ভূপেন্দ্রনাথ হালদারের জনপ্রিয়তা সকলকে হার মানাবে। বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, প্রার্থীকে গুলি করার বিষয়ে বিজেপির লোক জড়িত নয়। এতে ভোটবাক্সে কোনও প্রভাব পড়বে না। তৃণমূল সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল বিজেপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।


সম্প্রতি ভোটপ্রচারে বেরিয়ে সাহাপুর ঝন্টু মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন মালদহ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী গোপাল সাহা। বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়েই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়।  তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও  শুরু থেকেই বিজেপি নেতারা দাবি করে আসছিলেন, ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের যোগ রয়েছে। শেষপর্যন্ত পুলিস ঘটনার তদন্ত চালিয়ে  বিজেপি ঘনিষ্ঠদের গ্রেপ্তার করে।  একে একে সাতজনকে ধরে মালদহ থানার পুলিস আদালতে তোলে। আদালতের নির্দেশে তাদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবে এই ইস্যুকে তৃণমূল সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল হাতছাড়া করতে চায়নি। গুলি  আদতে বিজেপির লোকেরাই চালিয়ে সহানুভূতির ভোট নেওয়ার চেষ্টা করছিল বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে। বিষয়টি নিয়ে তারা সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচার করছে। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে  বিজেপি মালদহ বিধানসভায় এক লক্ষের বেশি ভোটের লিড পেয়েছিল। তবে গুলিকাণ্ড বুমেরাং হওয়ার আশঙ্কায় এখন বিপাকে পড়েছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #gopal saha, #akash mondal

আরো দেখুন