দেশজুড়ে নিন্দার ঝড়, চাপে পড়ে ১৮ ঊর্ধ্বদের বিনামূল্যে টিকার ভাবনা কেন্দ্রের
রেকর্ড গড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। বৃহস্পতিবার সকালের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় সংক্রামিত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার ২৫৭ জন। ৩ হাজার ৬৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক বুঝে এদিনই লকডাউনের রাস্তায় হেঁটেছে উত্তরপ্রদেশ, গোয়া। বিধিনিষেধের মেয়াদ বেড়েছে মহারাষ্ট্রে। এর মধ্যে আগামী শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে ১৮ ঊর্ধ্বদের টিকাকরণ (Vaccination)। দেশজুড়ে চাপের মুখে সেই ভ্যাকসিনও সরকারি কেন্দ্রগুলি থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর। শুক্রবার বসতে চলেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সেই বৈঠকেই এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। বিনামূল্যের টিকা প্রকল্প চালানোর জন্য বিভিন্ন রাজ্যকে ভর্তুকি দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
যদিও, চলতি টিকাকরণ কর্মসূচির ‘ফ্রি ডোজ’ নিয়েই কেন্দ্রের টানাটানি অবস্থা। প্রতিদিন গড়ে গোটা দেশে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ নাগরিককে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নথি বলছে, রাজ্যগুলিকে ’ফ্রি’ কোটা দেওয়ার জন্য তাদের কাছে আর মাত্র তিনদিনের ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে। সব মিলিয়ে ৬৩ লক্ষের কিছু বেশি ডোজ। ১ কোটির কিছু বেশি ডোজ রয়েছে রাজ্যগুলির হাতে। বাকি পাঠানো হবে ২০ লক্ষের কিছু বেশি ডোজ। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের ২৭টি রাজ্য এখনই কোনও টিকা পাবে না। বুধবার আন্দামান নিকোবর, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরা, লাদাখের মতো ছোট ও পাহাড়ি ১৪টি রাজ্যকে আগামী তিনদিন ভ্যাকসিন পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যাটি বেড়ে হয়েছে ২৭। পশ্চিমবঙ্গের কাছে মাত্র ৪ লক্ষ ৯৪ হাজারের কিছু ডোজ রয়েছে। ফলে ৪৫ ঊর্ধ্ব সাধারণ নাগরিকদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ সময়মতো পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে উৎকণ্ঠা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন বলেছেন, টিকার অভাব হবে না। তবে তিনি যতই আশ্বাস দিন, দিল্লি, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, ঝাড়খণ্ডের মতো একগুচ্ছ রাজ্য কেন্দ্রকে জানিয়েছে, তাদের কাছে পর্যাপ্ত টিকা নেই। এরই মধ্যে আজ, শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে করোনা সামাল দিতে মোদি সরকার কী করেছে, তার শুনানি।
একে তো ভ্যাকসিন অপ্রতুল, তার উপর চিন্তা বাড়াচ্ছে ডোজের দাম! মোদি সরকারের নতুন টিকা নীতিতে আগামী ১ মে থেকে বেসরকারি হাসপাতালে ৪৫ ঊর্ধ্বদেরও আর ২৫০ টাকায় ডোজ মিলবে না। কত খরচ পড়বে, তা এখনও ঠিক হয়নি। এদিকে, সিরামের পর এবার রাজ্য সরকারের জন্য কোভ্যাকসিনের দাম কমিয়েছে ভারত বায়োটেকও। আগের ধার্য দাম ৬০০ টাকার পরিবর্তে এখন রাজ্যগুলি সেই ডোজ ৪০০ টাকায় কিনতে পারবে।
অন্যদিকে, উপসর্গহীন বা সামান্য উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের হোম আইসোলেশনের জন্য নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। জানানো হয়েছে, সপ্তম দিন থেকে জ্বর না থাকলে হোম আইসোলেশনে ১০ দিন থাকার পরই বেরিয়ে আসতে পারবেন করোনা আক্রান্তরা। নতুন করে আর কোভিড টেস্ট (Covid Test) করানোরও প্রয়োজন নেই। চার ঘণ্টা অন্তর শরীরের তাপমাত্রা, হৃদস্পন্দন, অক্সিজেনের মাত্রা মাপার কথা বলা হয়েছে। বাড়িতে থাকা করোনা রোগীরা কোনওভাবেই রেমডিসিভির নেবেন না বলে সতর্ক করেছে মন্ত্রক।