‘ইমেজ’ বাঁচাতে সংবাদমাধ্যমকে বেড়ি পরাতে চায় নির্বাচন কমিশন, বিতর্ক
দেশে কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ছড়ানোর ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) দায়ী বলে মাদ্রাজ হাই কোর্ট (Madras High Court) তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল। নির্বাচন কমিশনকে ‘খুনি’র সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল। আদালতের এই পর্যবেক্ষণে আপত্তি জানাল নির্বাচন কমিশন। মাদ্রাজ হাই কোর্টে নির্বাচন কমিশন বলেছে, এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমে যে সব খবরাখবর প্রকাশিত হয়েছে, তাতে স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা হিসাবে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ‘ক্ষুণ্ণ’ হয়েছে। সঙ্গে বলা হয়, আদালতের পর্যবেক্ষণের সময় বিচারপতিদের মৌখিক বক্তব্য সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে আসা অনভিপ্রেত। শুক্রবার এ ব্যাপারে ফের শুনানি হবে মাদ্রাজ হাই কোর্টে।
গত সোমবার মাদ্রাজ হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে বলেছিল, দেশে কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। এর জন্য সংস্থার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা উচিত। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তা ফলাও করে প্রকাশিত হয়।
সোমবার মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সেন্থিলকুমার রামমূর্তির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হলে নির্বাচন কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন। জানিয়ে দেন, অতিমারি আবহে রাজনীতিকরা তো বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করেননি, কমিশনও কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
কমিশনকে ভর্ৎসনা করে প্রধান বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘আজকের এই পরিস্থিতির জন্য আপনারাই দায়ী। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাজনীতিকরা জনসভা করেছেন। পদযাত্রায় বেরিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেননি। আপনাদের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হওয়া উচিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অথচ দুঃখের বিষয়, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকেই, এই গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে। বেঁচে থাকলে তবেই তো গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করতে পারবেন মানুষ!’’
এতে আপত্তি তুলে নির্বাচন কমিশনের তরফে মাদ্রাজ হাই কোর্টে জানানো হয়,পর্যবেক্ষণের সময় বিচারপতিদের মৌখিক বক্তব্য সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে আসা অনভিপ্রেত। পর্যবেক্ষণে লিখিত ভাবে বিচারপতিদের যে মন্তব্য রেকর্ড করা থাকছে, সে ইটুকুই উঠে আসা উচিত সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে।
কমিশনের তরফে আদালতে এও জানানো হয়েছে, দ্বিতীয় তরঙ্গের বৃদ্ধির জন্য যদি কারও দায় থাকে, সেটা রাজনীতিকদেরই, নির্বাচন কমিশনের নয়।