গণনাকেন্দ্রে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া চলবে না, প্রার্থীদের নির্দেশ মমতার
তাঁরাই যে ‘ভাল ভাবে’ সরকারে আসতে চলেছেন, দলের প্রার্থীদের তা জানিয়ে দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দুপুরে দলের প্রার্থীদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা জানিয়েছেন, তাঁরাই ভাল ভাবে সরকারে আসবেন। কিন্তু প্রার্থীরা যেন গণনাকেন্দ্র না ছাড়েন। এক প্রার্থীর কথায়, ‘‘দিদি বলেছেন, গণনাকেন্দ্র ছাড়লে চলবে না। মিডিয়ার সঙ্গে বিজেপি-র বোঝাপড়া হয়ে গেছে। প্রথম দিক থেকেই দেখাবে, ওরা এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঘাবড়ালে চলবে না। হতাশায় গণনাকেন্দ্রে ছেড়ে আসা ঠিক হবে না। শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতব। বিজেপি অনেক রকম বদমাইশি করতে পারে। ওদের পাতা কোনও ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না। আমাদের জয় নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। বিভ্রান্তিমূলক প্রচারে যেন কেউ কান না দেন।’’
ওই বৈঠকে মমতা আরও নির্দেশ দিয়েছেন, প্রার্থীরা যেন খাতা-কলম নিয়ে ভোর ভোর গণনাকেন্দ্রে পৌঁছে যান। এবং তাঁরা যেন শেষ পর্যন্ত চেয়ার ছেড়ে না ওঠেন। মমতা প্রার্থীদের বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে, তৃণমূলের প্রচুর আসন আসবে। কিন্তু তৃণমূলের নিশ্চিত জয় হবে, এমন আসনগুলিতে বিজেপি গোলমাল বাধানোর চেষ্টা করবে। তাই প্রার্থীরা যেন সতর্ক থাকেন। কোনও সমস্যা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে যেন দলীয় নেত্বকে জানানো হয়।’’ মমতা প্রার্থীদের আরও জানিয়েছেন— জলপাইগুড়ি, কোচবিহার বিশেষত, উত্তরবঙ্গে তৃণমূল প্রথম দিকে হয়ত পিছিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তার জন্য কোনও প্রার্থী যেন মন খারাপ করে গণনাকেন্দ্রের চেয়ার ছেড়ে উঠে না যান। শেষের দিকে কিছু আসনে তৃণমূলের জয় হবে। তাই আগেভাগে কেউ যেন বেরিয়ে না যান। পাশাপাশিই মমতা বলেছেন, প্রার্থীরা যেন ১৭ নম্বর ফর্মটি ভাল করে দেখে-বুঝে নিয়ে তার পরেই গণনা শুরু করতে দেন। মমতা যেমন জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলার আসনগুলির কথা বলেছেন, তেমনই বৈঠকে উপস্থিত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়ার কথা। অর্থাৎ, তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব ডুয়ার্স এবং জঙ্গলমহলের আসনগুলির উপর বিশেষ নজর রাখার কথা বলেছেন। কারণ, তাঁদের মতে, ওই আসনগুলিতে বিজেপি-র কোনও ‘বিশেষ পরিকল্পনা’ আছে। পাশাপাশিই অভিষেক বৃহস্পতিবার বুথফেরত সমীক্ষাগুলির উল্লেখ করে বলেছেন, সমস্ত সমীক্ষাই দেখিয়েছে তৃণমূল এগিয়ে। সুতরাং প্রার্থীরা যএন ভরসা এবং বিশ্বাস রাখেন যে, তৃণমূলই দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরছে।
গণনাকেন্দ্রের এজেন্টদের জন্য দু’টি হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের কোনও সমস্যা হলে যেন তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে দলের শীর্ষনেতৃত্বকে জানান। শেষ গণনা পর্যন্ত যেন প্রার্থীরা গণনাকেন্দ্রে বসে থাকেন। প্রার্থীরা যেন কোনও প্লোভনে পা না-দেন, সেই মর্মেও তাঁদের সতর্ক করে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা। নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁরা যেন কারও কাছ থেকে সিগারেট বা জল না-খান। বৈঠকের শেষে তৃণমূলনেত্রী মমতা দলের প্রার্থীদের জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে। তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব প্রার্থীদের আরও বলেছেন, রবিবারই শেষ লড়াইয়ের দিন। ফলে মাটি কামড়ে কাজ করতে হবে।