করোনাকালে নিউটাউনে ‘ওয়ার্ক ফ্রম কফি হাউস’ – উদ্যোগী হিডকো
কোয়ারেন্টাইন, মাস্ক, ওয়ার্ক ফ্রম হোম…। করোনা পর্বে এমন বেশ কিছু ইংরেজি শব্দবন্ধ ইতিমধ্যেই আমাদের মজ্জাগত হয়ে গিয়েছে। নতুন শব্দ ব্যবহারের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফিরে গিয়েছে সেই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ নীতিতে। কর্মীরা অনেকেই কাজ করছেন বাড়ি থেকে। বিশেষত সল্টলেক, সেক্টর ফাইভ, নিউটাউন সংলগ্ন তথ্যপ্রযুক্তি তালুকে কর্মরতরা সিংহভাগই ঘরে বসেই সারছেন অফিসের কাজ।
‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর ক্ষেত্রে দু’টি বিষয় মাথায় রাখা আবশ্যক। এক, ইন্টারনেটের ব্যবস্থা, দুই কাজের উপযুক্ত পরিবেশ। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এই দুই ব্যবস্থা সব সময় সহজলভ্য হয় না বাড়িতে। ফলে সমস্যায় পড়েন চাকরিজীবীরা। হয় ইন্টারনেটের সমস্যা, অথবা বাড়িতে কাজের উপযুক্ত পরিবেশের অভাব থাকায় কাজে মনোসংযোগ করতে পারেন না তাঁরা। ফলে কপালে জোটে ঊর্ধ্বতন কর্তাদের বকাঝকা। এই চিন্তা থেকে মুক্তির পথ বাতলে দিয়েছে নিউটাউনের কফি হাউস। তাদের বিজ্ঞাপনী ক্যাচলাইন— ওয়ার্ক ফ্রম হোমের বদলে ওয়ার্ক ফ্রম কফি হাউস। এই পরিষেবা নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি তালুকের কর্মীদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে হিডকো কর্তৃপক্ষ। তাদের বার্তা, বাড়ির বদলে নিউটাউনের নতুন কফি হাউসে বসেই যাবতীয় কর্মকাণ্ড করতে পারবেন চাকরিজীবীরা। গরম কফিতে চুমুক দিতে দিতেই এখানে বসে নির্দ্বিধায় করতে পারবেন অফিসের কাজ। সঙ্গে থাকছে ফ্রি ওয়াইফাই, চার্জিংয়ের ব্যবস্থা, নিখরচায় পার্কিং, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কাজের পরিবেশ।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, হিডকো’র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন জানিয়েছেন, সল্টলেকের তথ্যপ্রযুক্তি তালুক ও নিউটাউনের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ অফিসে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ নীতি চলছে। বাড়ি থেকে কাজ করলেও উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে ভোগেন অনেক কর্মী। অনেক সময় দেখা যায়, বাড়িতে ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস করছে। আবার একই বাড়িতে অনেকেই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ নীতিতে কাজ করায় ইন্টারনেট পরিষেবা দুর্বল হয়ে পড়ছে। দেবাশিসবাবুর বক্তব্য, বাড়িতে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে অসুবিধা হলে আমরা তাঁদের কাজের উপযুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে দেব। কর্তৃপক্ষের আশা, ল্যাপটপ অথবা ফোন নিয়ে কফি হাউসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বসে ভালোভাবেই কাজ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, করোনা আবহে ‘ওয়ার্ক ফ্রম কফি হাউস’-এর সুবিধা পাবেন কর্মীরা। সেক্ষেত্রে করোনাবিধি নিয়ন্ত্রিত হবে কীভাবে? কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট অ্যাপ মারফত ন্যূনতম দেড় ঘণ্টার ‘টাইম স্লট’ একদিন আগেই ‘বুক’ করতে হবে আগতদের। কেউ যদি বেশি সময় থাকতে চান, সেক্ষেত্রে পরপর দু’টি স্লট বুক করতে পারেন। প্রতি স্লটের ভাড়া মাত্র ২০ টাকা। একইসঙ্গে নিউটাউন কফি হাউস সূত্রে খবর, প্রবেশের সময় থার্মাল গান দিয়ে দেহের তাপমাত্রা মাপা হবে। ভিতরে মাস্ক পরে থাকা আবশ্যক। প্রত্যেকে মাস্ক পরে রয়েছেন কি না, সে ব্যাপারে নজরদারি চালানো হবে। অন্যদিকে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আসন সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে। এই মুহূর্তে এখানে ৭০টি আসন রাখা হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু বুকিংয়ের।