উত্তরবঙ্গে মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন করার পরিকল্পনা গণনার পর
আপাতত লকডাউন নয়, করোনার বাড়বাড়ন্ত রুখতে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন করার চিন্তাভাবনা করছে স্বাস্থ্যদপ্তর। যে বাড়িতে বা পাড়ায় কিংবা রাস্তা সংলগ্ন বাড়িতে সংক্রমণ হচ্ছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করে এমন জোন করার পরিকল্পনা চলছে। উত্তরবঙ্গে করোনা বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ডাঃ সুশান্তকুমার রায় শুক্রবার এ কথা বলেন। তাঁর কথায়, যে এলাকায় সংক্রমণ হচ্ছে, সেসব পাড়ার বাড়ি, রাস্তা চিহ্নিত করে ম্যাপ বানানো হচ্ছে। সেই ম্যাপ অনুযায়ী মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন করা হবে। রবিবার ভোটগণনা শেষ হওয়ার পরে ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার চিন্তাভাবনা চলছে।
জলপাইগুড়ি জেলা যেভাবে করোনার হটস্পট হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে তাও পরিসংখ্যান দিয়ে তুলে ধরেন সুশান্তবাবু। জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২১০৪। এর মধ্যে ১৫৬ জন ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের গাইডলাইনে বলা আছে, সংক্রমণের হার ১১ শতাংশের বেশি হলেই কন্টেইনমেন্ট জোন করা উচিত। সেই জায়গায় জলপাইগুড়িতে গত সাতদিন যে হারে করোনা ছড়িয়েছে, এখন এখানে সংক্রমণের হার ১৩.০৭ শতাংশ। অর্থাৎ গাইডলাইনকে ছাপিয়ে গিয়েছে। গত সাতদিনে জেলায় ৪৬০৯ জনের করোনা টেস্ট হয়েছিল। তারমধ্যে ৬০৭ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাতে এটা স্পষ্ট, সংক্রমণের হার বাড়ছে।
ওই স্বাস্থ্য আধিকারিকের ব্যাখ্যা, নির্বাচনের প্রচারের সময় যখন ভিন রাজ্য থেকে বহু মানুষের আগমন হতে শুরু করে। তারপর থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। তাঁর কথায়, এখন অনেকে মুখে মাস্ক পরছেন। কিন্তু মাস্ক পরা উচিত ছিল তিন মাস আগেই। তাহলে এখন আমাদের এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হত না। ইতিমধ্যেই এই রোগ কমিউনিটি স্প্রেড হয়ে গিয়েছে। ১৫ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত এই ভাইরাস আরও ভয়াবহ আকার নেবে বলে তিনি মনে করেন।
একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এদিন বিকেলে জেলায় পৌঁছেছে ১০ হাজার ভ্যাকসিন। প্রায় ১৭০০ কোভিড টেস্ট কিট এসেছে। এদিন সংক্রমণের আশঙ্কার কথা জানানোর পাশাপাশি আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, জেলায় কোভিড হাসপাতালগুলিতে এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত বেড রয়েছে। অক্সিজেন নিয়েও বড় কোনও সমস্যা নেই। বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গণে ৩৪৩টি বেডের মধ্যে ১৪০টি ফাঁকা। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সামনে নাইট শেল্টারে ১৫০টি, ফার্মেসি কলেজে ১৫০টি বেডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেফ হোম আছে ১১৫০টি বেড।