বিপুল জয়ের পর কালীঘাটে ‘মা-মাটি-মানুষের’ নামে পুজো দিলেন মমতা
চৈত্রের শেষ সন্ধ্যায় কালীঘাট মন্দিরে দাঁড়িয়েই নতুন ভোরের শপথ নিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে শপথ নিয়েছিলেন তৃণমূল (TMC) ক্ষমতায় এলে তিনি আবার যাবেন কালীঘাট মন্দিরে। মায়ের পায়ে মাথা ঠেকিয়ে আসবেন। রাজ্যে বিপুল জয়ের পর নিজের শপথ রক্ষা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনওরকম সেলিব্রেশন নয়, উচ্ছ্বাস নয়, সোজা মমতা চলে গেলেন মন্দিরে। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisek Banerjee) ও তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। তবে এদিনও নিজের জন্য কিছু চাননি মুখ্যমন্ত্রী। পুজো দিয়েছেন মা-মাটি-মানুষের নামে।
শেষবার কালীঘাট মন্দিরে মমতা গিয়েছিলেন পয়লা বৈশাখের প্রাক্কালে। ‘যা কিছু নতুন, শুভ হোক সব, সবার’ মায়ের কাছে সেই প্রার্থনা জানিয়ে এসেছিলেন নিজস্ব ভঙ্গিমায়। হাতজোড় করে সেদিন মমতা যখন মন্দির ছাড়ছেন, তখনই এক সেবাইত তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘দিদি, ২ মে ভোটে জেতার পর একবার মন্দিরে আসবেন তো?’’ প্রত্যয়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ঘুরে দাঁড়িয়ে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘‘কথা দিলাম, ২ মে ভোটে জিতে সবার আগে মায়ের কাছে আসব।’’ সেই কথা রাখলেন তৃণমূলনেত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীমায়ের সামনে। কালীঘাটে। একেবারে গর্ভগৃহে। গতবছর শুধু ছেদ পড়েছিল এই প্রথায়। করোনার দাপটে বন্ধ ছিল মায়ের গৃহে প্রবেশের দরজা। এবারও করোনা ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে। ধাক্কার শক্তিটাও অনেক বেশি। অন্যদিকে রাজনৈতিক আক্রমণের চক্রব্যুহে তো তাঁকে ঘিরে ফেলা হয়েছে মাঝেমধ্যেই। বারবার তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের তোষণের অভিযোগে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে তাঁর নিজের ‘ধর্ম’ নিয়েও। ‘বেগম’, ‘ফুফা’ কত কীই না শুনতে হয়েছে প্রতিপক্ষের কাছে। কিন্তু এতদিন ‘দিদি’ নীরবই থেকেছেন। কোনও কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির খেলায় মাতেননি তিনি। হয়তো সুবিচার চেয়েছিলেন মায়ের কাছে। আর বাংলার মানুষ আজ যখন তাঁকে দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করলেন, তখন সবার আগে মা’কে ধন্যবাদ জানাতে সোজা মন্দিরে চলে গেলেন মমতা। কথা রাখলেন দিদি।