রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পূর্ব বর্ধমানে বিজেপি সাফ, শিল্পাঞ্চলেও সবুজ ঝড়

May 3, 2021 | 2 min read

 ‘ষোলোআনা তৃণমূলীয়ানা’। পূর্ব বর্ধমানে (Purba Burdwan) তৃণমূলের (TMC) বিজয়রথের চাকায় গুঁড়িয়ে গেল পদ্ম শিবির। একুশের নির্বাচনে বিজেপির (BJP) দ্বৈরথ দেখানোর সুযোগ থাকলেও কার্যত মমতা ম্যাজিকে কুপোকাত জেলার ১৬ আসনের বিজেপি প্রার্থীরা। দু’একটি আসন ছাড়া সব আসনেই সহজ জয় হাসিল করেছে জোড়া ফুল শিবিরের প্রার্থীরা। শিল্পাঞ্চলেও এবার সবুজ ঝড় হয়েছে। জেলার ন’টির মধ্যে ছ’টি আস঩নেই জয়লাভ করেছে তৃণমূল। গত লোকসভা ভোটে ন’টি আসনে এগিয়ে থেকেও বিধানসভা ভোটে হালে পানি পেল না বিজেপি। মাত্র তিনটি আসনে জয়লাভ করছে গেরুয়া শিবির।


বর্ধমান দক্ষিণে তৃণমূলের খোকন দাস, বর্ধমান উত্তরে নিশীথ মালিক, কালনায় দেবপ্রসাদ বাগ, মঙ্গলকোটে অপূর্ব চৌধুরী, গলসিতে নেপাল ঘোড়ুই, কাটোয়ায় রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, কেতুগ্রামে শেখ শাহনওয়াজ, পূর্বস্থলী দক্ষিণে স্বপন দেবনাথ, পূর্বস্থলী উত্তরে তপন চট্টোপাধ্যায়, আউশগ্রাম কেন্দ্রে অভেদানন্দ থাণ্ডার, মেমারিতে মধুসূদন ভট্টাচার্য, ভাতারে মানগোবিন্দ অধিকারী, জামালপুরে অলোক কুমার মাজি, মন্তেশ্বরে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, রায়নায় শম্পা ধাড়া, খণ্ডঘোষের নবীনচন্দ্র বাগ জয়লাভ করেছেন। এবার জেলার বেশ কিছু কেন্দ্রে প্রার্থীর বদল করে গোষ্ঠীসমস্যা মিটিয়ে সহজ জয় ছিনিয়ে নিল তৃণমূল। জয়ের পর সকলেই বলেন, এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়। বাংলা নিজের মেয়েকেই চেয়েছে। বাংলার মানুষ দিদির উপর আবার ভরসা রেখেছেন। আমরা সকলেই সেই ভরসার যথাযোগ্য সম্মান দেব। জয় ছিনিয়ে নিয়ে সকলেই বলেন, দলবদলুরা হেরেছে, সব থেকে বেশি খুশি। যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেইমানি করেছে, তারা যোগ্য জবাব পাবে। এই হার থেকে ওদের অস্তিত্ব বিলীন হওয়া শুরু হবে। 


রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, আমরা জেলার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। উন্নয়নের স্বার্থে জেলাবাসী ১৬টি আসনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপহার দিয়েছেন। 
পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে মাত্র ৮০০ভোটে জয় পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী অজয় পোদ্দার। একদা বাম গড় আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ধুয়ে মুছে সাফ বামেরা। ৪৪বছর ধরে জিতে আসা জামুড়িয়া আসনে ২৫হাজারও ভোট পাননি সিপিএমের তরুণ তুর্কি ঐশী ঘোষ। জামুড়িয়ায় আট হাজারের বেশি ভোটে জিতে ঘাসফুল ফুটিয়েছেন হরেরাম সিং। পাণ্ডবেশ্বরে দলবদলু জিতেন্দ্র তেওয়ারিকেও মর্যাদার লড়াইয়ে ৩৮০৩ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।


আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মলয় ঘটক বিজেপি প্রার্থীকে ২১হাজার ১১০ভোটে পরাজিত করেছেন। জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সবচেয়ে দুর্বল কেন্দ্র রানিগঞ্জে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে সঙ্গী করে তাপসবাবু জিতেছেন প্রায় চার হাজার ভোটে। এবার নিয়ে টানা তিনবার বারাবনি আসনে জয়ী হলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিধান উপাধ্যায়। তাঁর জয়ের ব্যবধান ২৩হাজার ৪৫৭।


দলবদলু দুই বিজেপি প্রার্থীকে যোগ্য জবাব দিয়েছেন শিল্পাঞ্চলের মানুষ। দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী দীপ্তাংশু চৌধুরীকে পরাজিত করেছেন রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। তিনি ৩৭৪৬ভোটে জয়লাভ করেছেন। দু’মাস ধরে মাঠে ময়দানে প্রচারে ঝড় তোলা আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ দিনভর টানটান লড়াই দিয়েও শেষ মুহূর্তে প্রায় চার হাজার ভোটে পরাজিত হন। এখানে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পল জিতেছেন। দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মণ ঘোড়ুই প্রায় ১৫হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #tmc, #purba burdwan

আরো দেখুন