‘ফাইটার দিদি’র জয়ে উৎফুল্ল ক্রীড়ামহল
বাংলায় টানা তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় তৃণমৃল কংগ্রেস। ফের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। লড়াকু নেত্রীর কাছে কী চাহিদা ক্রীড়ামহলের? নীচে রাজ্যের পাঁচ ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হল।
প্রশান্ত ব্যানার্জি: প্রথম দু’টি টার্মে বাংলার খেলাধুলার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর দেড়েক আগে বাংলার মহিলা ফুটবলের উন্নতির জন্য তাঁর সক্রিয় সহযোগিতায় হয়েছিল কন্যাশ্রী কাপও। ঘটনা হল, ইদানীং স্পোর্টস কোটায় চাকরির সংখ্যা খুবই কমে গিয়েছে। আগে রেল, ব্যাঙ্ক ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নবরত্ন সংস্থায় অনেক খেলোয়াড় চাকরি পেতেন। এখন সেই দিন আর নেই। আশা করি, এবার এই ইস্যুতে এবার সরব হবেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী।
শিশির ঘোষ: এবারের নির্বাচন দিদির কাছে ছিল প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জের। কিন্তু দেশের অতি সঙ্কটকালে তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথ নিচ্ছেন। গতবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কড়া হাতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে দেখেছি তাঁকে। আশা করি, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই অক্সিজেন সমস্যা নিরসনে উনি উদ্যোগ নেবেন। বিভিন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্তরে ‘অক্সিজেন ব্যাঙ্ক’ তৈরি করতে পারলে খুব ভালো হয়। তাঁর আমলে ফুটবল, তিরন্দাজি ও সাঁতারে হয়েছে নতুন অ্যাকাডেমি। এবার রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদ দিদির অনুপ্রেরণায় বাস্কেটবল, ভলিবল, অ্যাথলেটিক্সে তরুণ প্রতিভা তুলে আনার উদ্যোগ নিলে আখেরে লাভ বাংলারই।
অরুণ লাল (বাংলার কোচ): তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীর হওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশেষ অভিনন্দন। গত দশ বছরে রাজ্য জুড়ে পরিকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন দেখেছি। তারই প্রতিফলন ঘটেছে ভোটবাক্সে। দিদির কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ, এবার জোর দেওয়া হোক বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের উপর। ক্রিকেটীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এটা বুঝতে পারি, দিদি একজন ফাইটার। উনি নিশ্চয়ই খেলাধুলার উপর বাড়তি নজর দেবেন।
সম্বরণ ব্যানার্জি (প্রাক্তন ক্রিকেটার): এটা এক অবিস্মরণীয় জয়। কেউ ভাবতেই পারেননি তৃণমূল কংগ্রেস এত আসন নিয়ে তৃতীয়বার সরকার গড়বে। এটা পুরোপুরি মমতা ব্যানার্জির একক প্রয়াসের ফসল। তাঁর লড়াই, হার না মানা মানসিকতার কাছে বিজেপির মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষও পরাস্ত হল। বাংলায় যে বিজেপির কোনও স্থান নেই, সেটা মমতা ব্যানার্জি ফের প্রমাণ করে দিলেন।
জয়দীপ কর্মকার: রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে অগ্নিপরীক্ষায় সফল হয়েছেন দিদি। ২০২১ সালে ‘বাংলার বিধানে’ তাঁর চোয়ালচাপা লড়াই প্রতিটি ক্রীড়াবিদের কাছে শিক্ষণীয়। এবার ওঁর হাত ধরে বাঙালির উত্তরণ হোক জাতীয় স্তরে। আগামী দিনে দিদির নেতৃত্বেই জাতীয় রাজনীতিতে পথ দেখাক বাংলা। গত ছয়-সাত বছরে বাংলাকে অসম্মান করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত থাকতে হয়েছে আমাদের। এবার গর্জে ওঠার সময়। দিদির ১০ বছরে প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড়রা অনেক কিছু পেয়েছেন। আশা করি, আগামী দিনেও সেই ধারা বজায় থাকবে।