বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও আরামবাগে মুখরক্ষা বিজেপির
গোটা রাজ্যে সবুজ ঝড় গেরুয়া শিবিরকে তছনছ করে দিলেও মুখরক্ষা হল পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও আরামবাগে। বাঁকুড়ায় ১২টির মধ্যে আটটি আসনে বিজেপি ও চারটি তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। রবিবার রাত ৮টা পর্যন্ত পুরুলিয়াতেও বিজেপি (BJP) ছ’টি আসনে এবং তৃণমূল তিনটি আসনে এগিয়ে রয়েছে। আরামবাগ মহকুমাতেও বিজেপি চারটি আসনে জয় পেয়েছে। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় গত বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কং জোটের আসন থাকলেও এবার তারা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলেরও বাঁকুড়া ও আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতিরা পরাজিত হয়েছেন।
বাঁকুড়া কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির নীলাদ্রিশেখর দানার কাছে ১৩৭৬ ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন। তবে বড়জোড়া আসনে ৩২১২ ভোটে তৃণমূল প্রার্থী অলোক মুখোপাধ্যায় জয়ী হয়েছেন। ছাতনায় বিজেপি প্রার্থী সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায় ৭১৬৪ ভোটে এবং শালতোড়ার বিজেপি প্রার্থী চন্দনা বাউরি ৫৪৩৮ভোটে জয় পেয়েছেন। ওন্দায় বিজেপি প্রার্থী অমরনাথ শাখা ৭৫৬৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন।
তবে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের তিনটি আসনেই ঘাসফুলের ঝড় বয়েছে। তালডাংরার তৃণমূল প্রার্থী ১২১৩৮ ভোটে এবং রাইপুরের তৃণমূল প্রার্থী মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু ১৯৩৯৮ ভোটে জয়ী হয়েছেন। রানিবাঁধ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জ্যোৎস্না মাণ্ডি ৩৮৩৯ ভোটে জয়ী হয়েছেন। এদিন অরূপবাবু জয়ীর শংসাপত্র না পাওয়ায় অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। রাতে অবশ্য তাঁর হাতে ওই শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।
বিষ্ণুপুরে বিজেপি প্রার্থী তন্ময় ঘোষ ১১৪২০ ভোটে এবং কোতুলপুরের বিজেপি প্রার্থী হরকালী প্রতিহার ১১৭৮৫ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।
সোনামুখী কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরাকে ১০,৭৭৪ ভোটে পরাজিত করেন বিজেপি প্রার্থী দিবাকর ঘরামি। ইন্দাসে তৃণমূল প্রার্থী রুনু মেটেকে ৭৩২৯ ভোটে পরাজিত করেছেন বিজেপি প্রার্থী নির্মল কুমার ধাড়া।
বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা সোনামুখীর প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা বলেন, দল রাজ্যে ভালো ফল করলেও বাঁকুড়ায় তুলনামূলক ফল খারাপ হয়েছে। মানুষকে আমরা হয়তো বোঝাতে পারিনি। আগামিদিনে আমরা ভুল শুধরে মানুষের আরও কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করব।
পুরুলিয়ার ন’টি আসনের মধ্যে তৃণমূল (Trinamool) তিনটি আসনে এগিয়ে রয়েছে। বান্দোয়ান আসনে তৃণমূল প্রার্থী রাজীব লোচন সোরেন, মানবাজারের তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যারানি টুডু এবং তৃণমূল প্রার্থী সুশান্ত মাহাত এগিয়ে আছেন। বাঘমুণ্ডিতে পিছিয়ে রয়েছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাত। বাকি রঘুনাথপুর আসনের বিজেপি প্রার্থী বিবেকানন্দ বাউরি, কাশীপুরের বিজেপি প্রার্থী কমলাকান্ত হাঁসদা, পাড়ার নদিয়ারচাঁদ বাউরি, জয়পুরের নরহরি মাহাত, পুরুলিয়ার সুদীপ মুখোপাধ্যায় এগিয়ে আছেন।
গত লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়ায় মানবাজার আসনটি বাদে সবকটিতেই এগিয়েছিল বিজেপি। যদিও এবার সেই সাফল্য কার্যত ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। বলরামপুর আসনে একটি ইভিএমের মক পোলের ভোটও মোট ভোটের মধ্যে কাউন্ট হয়ে থাকার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাত।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, তিনি ১৮৬টি ভোটে বিজেপি প্রার্থী বাণেশ্বর মাহাতর কাছ থেকে পিছিয়ে রয়েছেন। ওই অভিযোগকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুক্ষণ ভোট গণনা বন্ধও থাকে। তবে এখনও কোনও মীমাংসা হয়নি। এবিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন বলরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী। আরামবাগের বিজেপি প্রার্থী মধুসূদন বাগ ৭৬৩৭ভোটে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলকে পরাজিত করেছেন। গোঘাটে বিজেপি প্রার্থী বিশ্বনাথ কারক ৪০৮৮ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। খানাকুলে বিজেপি প্রার্থী সুশান্ত ঘোষ ১৩,২৫২ ভোটে এবং পুরশুড়ায় বিজেপি প্রার্থী বিমান ঘোষ ২৭৭৪৩ ভোটে জয়ী হয়েছেন।