রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বাংলায় বিজেপির ভরাডুবি, জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু সেই মমতা

May 4, 2021 | 2 min read

কোভিড (COVID19) কমলেই ব্রিগেডে (Brigade) বিজয় সমাবেশ। আর সেই সমাবেশে হাজির থাকবেন দেশের তাবৎ বিজেপি বিরোধী দলের নেতানেত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীরা। সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজেই জানিয়েছেন, এটা বিজয় সমাবেশ অথবা বড়সড় অনুষ্ঠান করে শপথগ্রহণের সময় নয়। এখন কোভিডকে পরাস্ত করাই ব্রত। কিন্তু তার মধ্যেই দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে অন্য জল্পনা। বাংলার বিপুল জয়ের পর মোদি বনাম মমতার লড়াই কি আবার দেখা যাবে লোকসভা ভোটে?

সোমবার দিনভর তৃণমূল সুপ্রিমোকে ফোন করেছেন জাতীয় স্তরের নেতা ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। কেউ বলেছেন, ‘দিদি মজা আ গয়া! ইউ আর গ্রেট!’ কারও উচ্ছ্বাস, ‘মমতাজি, বাংলা এবার যা দেখাল, এরকম ধাক্কা বিজেপি কোনওদিন খায়নি।’ কেউ আবার বলেছেন, ‘কোভিড নিয়ে রাজ্যগুলির ভ্যাকসিনের দাবি জোরদার করতে সকলে জোট বেঁধে কেন্দ্রকে চাপ দিতে হবে। আপনাকেই সেই উদ্যোগ নিতে হবে।’


রবিবার রাতেই অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানিয়ে ট্যুইট শুরু হয়েছিল। সোমবার সকাল থেকে ফোনের বন্যা। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, বিজেপি বিরোধী দলগুলির থেকে দূরত্ব রেখে বিভিন্ন ইস্যুতে পরোক্ষে এনডিএ-কে সমর্থন করে যাওয়া ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক ফোন করেন মমতাকে। শুধুই অভিনন্দন বার্তা নয়, তাঁদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনাও হয় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কোভিড সমস্যা নিয়ে। বস্তুত গোটা দেশের মধ্যে একমাত্র নবীন পট্টনায়েক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন লাগাতার নরেন্দ্র মোদির আগ্রাসনকে নিজেদের রাজ্যে আটকে দিতে। পার্থক্য হল, নবীন পট্টনায়ক সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সর্বদাই মোদি সরকারের যে কোনও সিদ্ধান্তকেই সমর্থন করেন। তাই তাঁকে বলা হয় এনডিএ প্লাস। আর অন্যদিকে, একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী ও রাজনৈতিক দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি বিজেপি কিংবা নরেন্দ্র মোদি, কারও সঙ্গেই আপসের সম্পর্ক বজায় রেখে মধ্যপন্থা নেননি। মোদি ও বিজেপি বিরোধী তাঁর অবস্থান কট্টর এবং হাইভোল্টেজ। ওই অবস্থান বজায় রেখেই ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯ এবং ২০২১—এই চার নির্বাচনেই বিজেপিকে বাংলায় পরাস্ত করেছেন মমতা। এই রেকর্ড দেশে আর কারও নেই। সেই কারণেই রবিবারের জয়ের পর গোটা দেশের বিজেপি বিরোধী দলগুলির কাছে অন্যতম সম্মান ও সমীহের জায়গা করে নিচ্ছেন মমতা।


মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারে মমতাকে ফোন করে রাজ্যগুলির কোভিড সমস্যা ও ভ্যাকসিনের দাবি নিয়ে কথা বলেন। সোমবারই ফোন আসে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব, উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের। রবিবার রাতে মমতাকে ফোন করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, দিদি ইয়ে তো মজা আ গয়া। অখিলেশ বলেন, বাংলার মানুষ উচিত শিক্ষা দিয়েছে বিজেপিকে। এবার যারা মমতার বিরুদ্ধে পৃথক জোটে লড়াই করেছে, সেই কংগ্রেসের দুই রাজ্যের নেতা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এবং হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা মমতাকে ফোন করে এই বিপুল জয়ের কারিগর হিসেবে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একইসঙ্গে রবিবার থেকে বাংলা নিয়ে শুরু হওয়া চর্চা, জল্পনা এবং আলোচনা দেশজুড়ে বিদ্যমান সোমবারও। বাংলার এই বিপুল জয়ের পর আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতির সমীকরণ কতটা বদলে যেতে পারে, সেই জল্পনা চলছে তীব্রভাবে। রেকর্ড জয়ে বাংলা দখলের পর দিল্লির জাতীয় স্তরে মমতার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। ফোন আরও এসেছে মমতার কাছে—সজ্জন জিন্দাল, লক্ষ্মী মিত্তল ও মুকেশ আম্বানির। তাহলে কি বড় শিল্পও এবার বাংলামুখী?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #tmc, #National politics, #Mamata Banerjee

আরো দেখুন