ভোট ভরাডুবির জন্য দায়ী প্রদীপ-শিব-কৈলাস, রাজ্য নেতাদের তোপে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
দল নীলবাড়ির লড়াইয়ে হারতে চলেছে এমন ইঙ্গিত মেলার পর রবিবার দুপুর থেকেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা শুরু করেন রাজ্য বিজেপি-র নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঠিক করে দেওয়া লক্ষ্য ছিল— এ বার, ২০০ পার। গণনার শেষে কোনওক্রমে ৭৭-এ আটকে থাকা বিজেপি-র রাজ্য নেতারা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও গোটা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে আঙুল তোলা শুরু করে দিয়েছেন। প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁদের বক্তব্য, ‘‘বাংলায় যাঁরা সেনাপতি হয়ে এসেছিলেন, জিতলে তাঁরা কৃতিত্ব নিতেন। এখন হারের দায়ও নিতে হবে।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের দিকে নাম না করে আঙুল তোলার পাশাপাশি রাজ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩ নেতাকেও কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। এই ৩ নেতা হলেন আরএসএস কর্তা প্রদীপ যোশী, বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিব প্রকাশ এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষে রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
দিল্লির নেতাদের নির্দেশ রাজ্যে কার্যকর করার কাজটা এই ৩ জন করে আসছেন গত কয়েক বছর ধরেই। রাজ্য বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, অন্য দল থেকে বিজেপি-তে কারা যোগ দেবেন, তা চূড়ান্ত করা থেকে কোথায়, কোন কোটায়, কে প্রার্থী হবেন, সবটাই ঠিক করতেন এঁরা। এখন দলের দুর্দিনের জন্য এঁরাই দায়ি বলে দাবি রাজ্য বিজেপি নেতাদের বড় অংশের। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘যে কোনও রাজ্যে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি নিয়ে থাকে বিজেপি। সর্বভারতীয় দল হিসেবেই এই নীতি। এর অনেক সুবিধার দিকও রয়েছে। ফল খারাপ হয়েছে বলে কাউকে দোষারোপ করা ঠিক নয়।’’
দিলীপ এমনটা বললেও রাজ্যে বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘স্থানীয় নেতাদের গুরুত্ব না দিয়ে অনেক জায়গাতেই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছেন এঁরা। প্রার্থী তালিকা তৈরির ক্ষেত্রেও এঁরা নিজেদের প্রভাব প্রয়োগ করেছেন। মন থেকে নিতে না পারলেও মেনে নিতে হয়েছে। এখন তাঁরা অন্য দায়িত্ব পেয়ে হয়তো রাজ্য থেকে চলে যাবেন। কিন্তু হারের ফল ভুগতে হবে আমাদের।’’
ওই বিজেপি নেতার আরও বক্তব্য, ‘‘দলের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই ৩ জনের নির্দেশকেই আমরা শিরোধার্য মেনে এসেছি। এঁরাই আমাদের কাছে মোদী-শাহ ছিলেন। এখন ওঁদেরই ঠিক করতে হবে কোন পথে ঘুরে দাঁড়াবে দল। কী ভাবে রক্ষা পাবেন কর্মী, সমর্থকরা।’’