দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীর কুর্শিতে মমতা, আজ উৎসব কুসুম্বায়

May 5, 2021 | 2 min read

 ‘খুব কষ্ট করেছে মমতা। ওর কিছু নেই। আছে শুধু লক্ষ লক্ষ জনগণের আশীর্বাদ। ও আরও বেশি করে মানুষের হয়ে কাজ করুক। আজ দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা) বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন। আমি ওকে দেশের প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই।’ মুখ্যমন্ত্রী পদে ভাগনির তৃতীয়বার শপথের আগের দিন ভাগনির ছবির দিকে তাকিয়ে আবেগে ভাসলেন মামা অনিল মুখোপাধ্যায়। কোভিড পরিস্থিতি ও নিজের অসুস্থতার জন্য এবার কলকাতার কালীঘাটে যেতে পারছেন না মামা। তবে ফোনে ভাগনিকে অভিনন্দন ও আশীর্বাদ জানিয়েছেন তিনি।  


রামপুরহাটের কুসুম্বা গ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামার বাড়ি। পৈতৃক ভিটে কুসুম্বা লাগোয়া চাকাইপুর গ্রাম হলেও মামার বাড়িতেই জন্ম মমতার। এই এলাকাতেই প্রাথমিক শিক্ষা তাঁর। ন’বছর বয়সে কলকাতা পাড়ি দেন। প্রতি ডিসেম্বর মাসে পরীক্ষার শেষে মামার বাড়ি চলে আসতেন। মাসখানেক থেকে আবার কলকাতায় ফিরে যেতেন। তখনকার সেই সাধারণ মেয়েটির অসাধারণ হয়ে ওঠার পিছনে ছিল অদম্য জেদ। বাড়ির বারান্দায় বসে এসব কথা শোনাতে শোনাতে নস্টালজিক হয়ে পড়লেন অনিলবাবু। তিনি বলেন, ছোটবেলায় অধিকাংশ সময় ও আমাদের বাড়িতেই থাকত। এখনও এই এলাকার বহু পুকুর ও জমির নাম মনে রয়েছে ওর। ছটফটে সেই ছোট্ট মেয়েটি কখনও গোরুর গাড়ির পিছনে দুলতে দুলতে জমিতে চলে যেত। জমি থেকে কলাই তুলে খেত। আবার কখনও নাওয়া খাওয়া ভুলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পুকুরে মাছ ধরা দেখত। কলাইভাজা, মুড়ি ছাড়াও ভাজাভুজি, নারকেল নাড়ু খেতে ভালোবাসত। প্রতিবাদী চরিত্রের সেই ছোট্ট ভাগনি এখন রাজ্যের উন্নয়ন করছে। গর্বে বুক ভরে যায়।

২০১৯সালের ৩০ জানুয়ারি রামপুরহাটে প্রশাসনিক সভা করতে এসে মামার বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় মামিমার হাত থেকে মিষ্টি খেয়েছিলেন। এর মাঝে কেটে গিয়েছে দু’বছর। মামিমা তাপসী মুখোপাধ্যায় মারা গিয়েছেন। অনিলবাবু বলেন, এর আগে দু’বার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন কালীঘাটে দিদির বাড়ি গিয়েছিলেন স্ত্রী। বেঁচে থাকলে এবারও ওকে আটকে রাখা যেত না। এবার আমার যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও শারীরিক অসুস্থতার জন্য যাওয়া হচ্ছে না। তবে ভাগনিকে ফোনে অভিনন্দন ও আশীর্বাদ জানিয়েছি। সেও গ্রামের খবরাখবর নিয়েছে। টিভিতে ভাগনির শপথ অনুষ্ঠান দেখব। আমি চাই এভাবেই ও বাংলার সবাইকে নিয়ে এগিয়ে চলুক। মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছা আর জেদই ওকে একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী করবে। মমতার মামাত ভাই নীহার মুখোপাধ্যায় বীরভূম জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, রাজ্যের সর্বত্র উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাটের আরও বেশি বেশি উন্নয়ন করুক দিদি, এটাই চাই। দু’বছর আগে মামার বাড়ি থেকে ফেরার পথে কনভয় দাঁড় করিয়ে গ্রামের সমাদিশ বাউড়ির দোকান থেকে চপ কিনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর জরাজীর্ণ দোকানটিকে পাকা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। সেই দোকান পাকা হয়েছে। ভোটের ফলে খুশি দোকান মালিক। ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই এলাকাবাসীর আনাগোনায় উৎসবস্থলের চেহারা নিয়েছে মমতার মামার বাড়ি। সকলেরই আশা, খুব শীঘ্রই কুসুম্বা আসবেন মমতা। একইভাবে মুখ্যমন্ত্রীর আগমনের আশায় বুক বাঁধছে তাঁর পৈতৃক বাড়ি চাকাইপুরবাসী।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #birbhum, #swearing-in ceremony, #kusumba, #anil mukherjee

আরো দেখুন