আলিপুরদুয়ারে কুপিয়ে খুন তৃণমূল কর্মীকে, অভিযুক্ত বিজেপি
আলিপুরদুয়ার জেলায় ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসার বলি হলেন এক যুবক। মঙ্গলবার রাতে আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের মথুরাহাটের কাছে বাড়ির পাশে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। পুলিস জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম দীপক রায় (৩২)। দীপক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের সহ সভাপতি পদে ছিলেন।
তিনি মথুরা অঞ্চলের ১২/৪৪ নম্বর বুথের তৃণমূল সভাপতি ছিলেন। অভিযোগ, ওই খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ জনতা এলাকার একটি পাথর ভাঙার কারখানায় ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও বিজেপি তাদের বিরুদ্ধে উঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিস সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, দীপক রায় আমাদের দলের বুথ সভাপতি ছিলেন। ওঁকে পরিকল্পিত খুনের পিছনে বিজেপির মদত আছে। নির্বাচনের পর জেলাকে অশান্ত করতে বিজেপি নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। পুলিস উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে আমরা গণ আন্দোলনের পথে হাঁটব।
যদিও পাল্টা অভিযোগ করে বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণেই মথুরায় ওই খুন হয়েছে। বিজেপি খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। যেকোনও মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। পুলিস সঠিকভাবে তদন্ত করলেই আসল সত্যিটা বেরিয়ে আসবে। আলিপুরদুয়ার থানার আইসি অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
এবার বিধানসভা ভোটের আগে আলিপুরদুয়ারে কোনও রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ছিল না। ভোট পরবর্তী জেলায় দীপকবাবুই প্রথম রাজনৈতিক হিংসার বলি হলেন। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দীপকবাবু সোনাপুরে যান।
সেখানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে তাঁর নিজের ছোট গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন। মথুরাহাটে বাড়ির কাছাকাছি আসতেই একদল দুষ্কৃতী দীপকবাবুর গাড়িটি আটকায়। দীপকবাবুকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। সেই সময়ে প্রাণ বাঁচাতে গাড়িতে থাকা তাঁর সঙ্গীরা পালিয়ে যান। দীপকবাবু রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুষ্কৃতীরাও রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে সোনাপুর ফাঁড়ির পুলিস গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় দীপকবাবুকে উদ্ধার করে বাবুরহাটে পাঁচকোলগুড়ি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।